বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পরিচালনা পদ্ধতি ও নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা করেছেন দল থেকে সদ্য পদত্যাগ করা ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান।
আগের রাতে পদত্যাগপত্র দেওয়ার পর বুধবার তিনি বলেন, “বিএনপির এতো বৃহত্তম একটা দল, এক বিশাল জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগতা জনমানুষের কাছে।
“সেই দলটি এখন স্কাইপের মাধ্যমে চলছে; এটা এখন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্কাইপ দল’ হয়ে গেছে। এটা বেদনার, এটা ক্ষোভের।”
প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, “আমি মনে করছি, এই দলের এখন আমার কনট্রিবিউশন করার মতো কিছু নেই। নতুন প্রজন্মকে এই দলের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে- এটাই আমার পরামর্শ।”
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে লন্ডন থেকে দল চালাচ্ছে তার বড় ছেলে তারেক রহমান, যিনিও দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে পলাতক।
দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে প্রায়ই তিনি স্কাইপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে আসেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে তারেকের বক্তব্য প্রচারে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞাকে যুক্তি হিসেবে হাজির করে স্কাইপ বা টেলি কনফারেন্সে তার যুক্ত হওয়ার বিরোধিতা করে আসছে আওয়ামী লীগ।
গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী বাছাইয়ে টেলি কনফারেন্সে তারেকের যুক্ত হওয়ার নির্বাচন কমিশনে ক্ষমতাসীনরা অভিযোগ দিয়ে তাতে কিছু করার নেই বলে কমিশন জানিয়ে দিয়েছিল।
সেনাশাসক জিয়াউর রহমানকে ১৯৮১ সালে হত্যার পর তার হাতে তৈরি বিএনপির নেতৃত্বে এসে প্রায় চার দশক ধরে দলটি চালিয়েছেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া।
২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার আমলে সরকারি কোনো পদে না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন তার ছেলে তারেক রহমান।
সর্বশেষ কাউন্সিলে শীর্ষ পদ চেয়ারপারসন পুনর্নির্বাচিত হন খালেদা জিয়া, তারেক হন জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা কারাবন্দি হওয়ার পর দলের হাল তারেকের হাতে।
মায়ের অনুপস্থিতিতে দলের শীর্ষ পদে এলেও এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের বাইরে আছেন তারেক। ২০০৮ সাল থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন তিনি।
এই প্রেক্ষাপটে গতবছর ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন বিএনপি নেতারা।
সম্প্রতি ছাত্রদলের কাউন্সিলেও তিনি লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে নতুন কমিটি গঠনে ভূমিকা রাখেন।