আজ ১৬ ডিসেম্বর। ৪৯তম মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্য-বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠার চিরস্মরণীয় দিন।
৯ মাসের সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে যৌথবাহিনীর কাছে। এর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যালোকে উদ্ভাসিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। সেই থেকে ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, অগণিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের আত্মত্যাগের কথা, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন সম্ভব হয়েছিল।
আজকের দিনে বিজয়োল্লাসে ভাসবে দেশ, আনন্দে উদ্বেলিত হবে গোটা জাতি। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত উদযাপিত হবে বিজয়ের দিনটি। উৎসবের সমারোহে জাতি শ্রদ্ধাবনতচিত্তে স্মরণ করবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদকে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপনে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রত্যুষে ঢাকার তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর এলাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের অনুষ্ঠানমালার সূচনা ঘটবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। পরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা শ্রদ্ধা জানাবেন। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিক, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত সদস্যরা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দরের জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমভিত্তিক যান্ত্রিক বহরের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদক দল বাদ্য বাজাবেন।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করবে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনীর নির্ধারিত জাহাজ সোমবার জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণ ঢাকার সদরঘাট. নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও বরিশালে এসব জাহাজ পরিদর্শন করতে পারবেন।
এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা জানানো হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা ও সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
অন্যান্য রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করবে। আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশের সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবর জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় আলোচনা সভায় জাতীয় নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা বক্তব্য দেবেন।
বিএনপি সকাল ৯টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন ছাড়াও কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ জেলা কার্যালয় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকালে শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, বিকেল ৩টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিজয় শোভাযাত্রা এবং সন্ধ্যায় কার্যালয়গুলোতে আলোকসজ্জা করবে।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ-‘৭১ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তন বেদিসংলগ্ন স্বাধীনতা চত্বরে বিস্তারিত অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। বিকেল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠানমালা শুরু হওয়ার পর বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ সামরিক কমান্ডের কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের প্রতীকী দৃশ্যের মঞ্চায়ন করা হবে। নৃত্য-সঙ্গীত ও দেশবন্দনার আকর্ষণীয় পরিবেশনাসহ অনুষ্ঠানমালার সমাপ্তি ঘটবে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের সেনাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাত থেকে নতুন প্রজন্মের হাতে জাতীয় পতাকা হস্তান্তরের মাধ্যমে। এর আগে সকাল ৮টায় ফোরাম নেতারা জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টি, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাসদ, বিকল্পধারা, এলডিপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদ, জেএসডি, গণতান্ত্রিক বাম জোট, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ (মার্কসবাদী) ও জাকের পার্টিসহ এসব দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, নজরুল একাডেমি, ছায়ানট, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতীয় প্রেসক্লাব, বিএফইউজে- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, মহিলা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সোমবার সকালে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে তোলা হবে জাতীয় পতাকা। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদক দল বাদ্য বাজাবেন।
বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। টেলিভিশন ও বেতারে থাকবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।
এছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। নৌ-বাহিনীর বেশ কিছু জাহাজ সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। ধর্মীয় উপাসনালয়ে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু বিকাশ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। দেশের সকল শিশু পার্ক ও জাদুঘর থাকবে উন্মুক্ত।
রাষ্ট্রপতির বাণী
বিজয় দিবসের বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দেশে আজ মুক্তিযুদ্ধের পতাকাবাহী গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজকে পরিপূর্ণতা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন ২০২১’, ‘ভিশন ২০৪১’ এবং শতবর্ষ মেয়াদি ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ নিয়েছেন।
জাতিসংঘ ঘোষিত ‘টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ২০৩০’ অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা এসব মহাপরিকল্পনার উদ্দেশ্য। দেশের জনগণ ইতোমধ্যে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সুফল পেতে শুরু করেছে। ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
“উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। তবে উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগিতা যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন জনগণের আচার-আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।”
রাষ্ট্রপতি বলেছেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।
“তাই আসুন, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরো বেশি অবদান রাখি এবং দেশ ও জাতিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেই। সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হোক, মহান বিজয় দিবসে-এ আমার প্রত্যাশা।”
প্রধানমন্ত্রীর বাণী
বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি দীর্ঘ তেইশ বছর রাজনৈতিক সংগ্রাম ও নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।
“বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে দেশ, গণতন্ত্র ও সরকারবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের এই উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এ বিজয় দিবসে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার টানা তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
“বিগত প্রায় ১১ বছরে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, কূটনৈতিক সাফল্যসহ প্রতিটি সেক্টরে আমরা ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। তৃণমূলের জনগণ আজ উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে।”
বিরোধীদলীয় নেতার বাণী
দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এক বাণীতে বলেন, বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে আনন্দের ও গৌরবের দিন মহান বিজয় দিবস।… বাঙালি জাতি যত দিন বেঁচে থাকবে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গৌরব করবে, অহংকার করবে।
“রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং শ্রেণি বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত সমাজ গঠনই ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য। বিজয়ের চার দশক পার হলেও মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য পরিপূর্ণরূপে এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।”
দলমত নির্বিশেষে তা বাস্তবায়নে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান বিরোধীদলীয় নেতা।