আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ বিএনপিকে চায় না। এটা ৯১, ৯২ হতে হতে তলানিতে গিয়ে ঠেকবে।’ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে নির্বাচন সম্পর্কে বিএনপির মন্তব্য হাস্যকর। তারা গণতন্ত্রের ভাষা বোঝে না, তারা আইন-আদালত কিছুই মানেন না। তাদের একমাত্র লক্ষ্য যে কোন উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়া এবং হত্যা, খুন এবং লুটপাটের রাজনীতি চর্চা করা। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে না পারলে চোরাইপথে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রয়েছে তাদের।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতার রাজনীতি করে। ক্ষমতা পেলে সব ঠিক, ক্ষমতা বা পেলে সব ভুল। তাদের লক্ষ ক্ষমতা ও লুটপাট। তাদের কার্যকলাপ ষড়যন্ত্রমূলক। তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা স্বাগত জানিয়েছি।’
আসন্ন সিটি করপোরেশ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন ওয়ার্ডে প্রার্থী উন্মুক্ত করেনি আওয়ামী লীগ।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য এবি এম রিয়াজুল কবির কাওছার প্রমুখ।
—————————————————————————————————————————————————————————–
ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফেরানোই প্রধান কাজ: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুর্নামের একটা ধারা ছাত্রলীগের নামের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। এখান থেকে সংগঠনটিকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনাই প্রথম ও প্রধান কাজ।
বুধবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগের ‘ওরিয়েন্টেশন কোর্স’-এর সূচনাপর্বে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘আচরণ খারাপ হলে উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। একটা খারাপ আচরণ ১০টি উন্নয়ন-অর্জনকে ঢেকে দিতে পারে। আমাদের নেত্রীর কোনো একটা অর্জন নিয়ে যখন সারাদেশে আলোচনা হচ্ছে, তখনই ছাত্রলীগের এমন একটা আচরণ দেখা যায়, যা নেত্রীর সোনালি অর্জনকে ম্লান করে দেয়। আমরা যারা ছাত্রলীগ করেছি, এতে আমাদের মন বিষাদে ভরে যায়।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বুয়েটে যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে আবরারকে হত্যা করে, এমন কর্মী দলের প্রয়োজন নেই। রাজশাহীতে পলিটেকনিকের অধ্যক্ষকে যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে অপমান করল, এ ধরনের নেতা দরকার নেই। গুটি কয়েকের জন্য পুরো দল দুর্নামের ভাগিদার হতে পারে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অপ্রিয় হলেও কিছু সত্যি বলি- ছাত্রনেতারা ১২টার আগে ঘুম থেকে ওঠে না, শুয়ে থাকে। সারা রাত জেগে জেগে কী করে, আল্লাহই ভালো জানেন। ছাত্রনেতার সামনে ২০, ৩০, ৫০টা বাইক। আরোহীদের কারও মাথায় হেলমেট নেই। এতে আমি সড়ক ও সেতুমন্ত্রী হিসেবে লজ্জা পাই। তারা ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। ছাত্রলীগে এমন নেতা দরকার নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হলে হলে ছাত্রনেতাদের রুম দখলের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনৈতিক রুম আছে, আশ্চর্যের ব্যাপার! কার কার এ ধরনের রুম আছে, খুঁজে বের করা হবে। যারা সিট বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য করে তাদের দরকার নেই। অন্যকে শেখাব, আর আমার অপরাধের বিচার হবে না? ওরিয়েন্টেশনের মূল বিষয় হচ্ছে আচরণ। ইতিহাস বেশি জানার দরকার, ভালো আচরণ দরকার।’
ছাত্রলীগ নেতাদের বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সবাই হারিয়ে যাবে। দুটি অর্জন কখনও মুছে যাবে না, একটা হলো বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সংগ্রাম। আর এই জনপদে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার অর্জন।
ছাত্রলীগের কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর পরিবারের দিকে তাকাও। আমাদের আদর্শ হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর পরিবার। সততার রাজনীতি, মেধার রাজনীতির প্রতীক হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পরিবার।’
ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।