ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খমেনি বলেছেন, ‘আমেরিকা নিজেকে পরাশক্তি দাবি করে দম্ভ দেখায়, জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে তা আমেরিকার সেই দম্ভে আঘাত করেছে। ড্রোন হামলা চালিয়ে কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা মার্কিন প্রশাসনের জন্য লজ্জার। এটা তাদের সন্ত্রাসী চরিত্র’।
আজ শুক্রবার তেহরানে মোসাল্লা মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় তিনি এসব কথা বলেন। গত আট বছরের মধ্যেই এই প্রথম জুমার নামাজে ইমামতি করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় এই নেতা।
তিনি আরো বলেন, তারা এখন বলছে আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করবে, কিন্তু এসবের মাধ্যমে তারা তাদের হারানো সম্মান ফিরে পাবে না। এসময় তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র দশ বারের বেশি ধ্বংস হয়ে যাবে।
এসময় খামেনি দখলদার ইসরাইলকে একটি ক্যান্সারের টিউমার আখ্যায়িত করে কেউ দেশটির বিরোধিতা করলে তাকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন।
জুমার নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের হাতে হাতে ইরানি জেনারেল সোলাইমানি ও ইরাকি কমান্ডার আবু মাহদি আল মোহানদেসের ছবি শোভা পাচ্ছিল। এরই মধ্যে অনেকেই আমেরিকা ও ইসরাইলের পতাকায় আগুন দিয়েছেন।
এর আগে ২০১২ সালে ইসলামী বিপ্লবের ৩৩তম বার্ষিকীতে জুমায় ইমামতি করেছিলেন ইসলামী প্রজাতন্ত্রটির ৮০ বছর বয়সী এ নেতা। তখন আরব বসন্তের প্রভাবে পুরো মধ্যপ্রাচ্য উত্তাল ছিল।
গত ৩ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে ড্রোন থেকে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যার বদলা নিতে গত ৮ জানুয়ারি ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরই ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পিএস৭৫২ তেহরানে বিধ্বস্ত হয়। বিমানের ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হন।
বিমান বিধ্বস্তের পর পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ দাবি করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রতেই ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্ত হয়। তবে কিছুদিন অস্বীকার করলেও শেষ পর্যন্ত মানবিক ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ইরান সেনাবাহিনী জানায়, তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয় ইউক্রেনগামী বিমান পিএস৭৫২।