বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ভারতের কাছে মাথা বিক্রি করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই ভোটারদের ভোট দেয়া নিয়ে তাচ্ছিল্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের জনগণ পরাধীন হয়ে যায়। আজ সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী আরো বলেন, শনিবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- কে ভোট দিলো, কে দিলো না তা বিবেচনা করে না আওয়ামী লীগ। এই বক্তব্যের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিলেন, তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য কিংবা সরকার গঠনের জন্য দেশের জনগণ কিংবা জনগণের ভোটের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় নিশিরাত আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জনগণের প্রতি, জনগণের ভোটাধিকারের প্রতি এমন অবজ্ঞা ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ মন্তব্য একমাত্র সরকার প্রধান এবং তার দল আওয়ামী লীগের পক্ষেই সম্ভব।
রিবভী বলেন, আওয়ামী লীগের ভোট দরকার নেই; তাদের নিজেদের প্রয়োজনে ইভিএম ব্যবহার করে ভোটাধিকার হরণের বন্দোবস্ত করেছে। সিইসি রাজনৈতিক নেতাদের মতো বক্তব্য দিচ্ছেন। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে হকার, পকেটমারদের মতোই কাজ করেছেন সিইসি। টাকার লোভে কিংবা শেখ হাসিনাকে সন্তুষ্ট করতেই ইভিএম ব্যবহার করতে মরিয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার। নিজের চাকরি রক্ষা করতে এসব করছেন তিনি।’
ভারতের নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে অর্ধেক মানুষ বাংলাদেশ ছেড়ে দেবে’- ভারতীয় মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভারতীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ, কাণ্ডজ্ঞানহীন এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য লজ্জাকর ও অপমানজনক। লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে, অসংখ্য মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় নয়।অথচ বাংলাদেশের জনগণ সম্পর্কে ভারত সরকারের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পরও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রকমের প্রতিবাদ জানানো হয়নি।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির জন্য সারাদেশে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত আছে। দু’দিন আগেও আমরা একটা বড় সমাবেশ করেছি। আমরা এখনো তার মুক্তি দাবি করছি। প্যারোলের আবেদন ও পরিবারের দেওয়া চিঠির বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে অবগত নন জানিয়ে রিজভী বলেন, যখন জানতে পারবো তখন অবশ্যই আপনাদের জানাবো।তিনি বলেন, তার স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়ে আমরা বারবার তুলে ধরছি। তার অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। সে জন্য আমরা এই মুহূর্তে তার মুক্তি দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।