ফাইনালে শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসানের আগ্রাসী বোলিং নজর কাড়ে সবার। ম্যাচ জুড়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেন দুই পেসার। যার স্পর্শে তাদের এমন দাপট, তিনি হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের বোলিং কোচ চাম্পাকা রামানায়েকে। লঙ্কান এই কোচ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে দেখছেন এমন সম্ভাবনাময় অনেক পেসার।
মাশরাফি বিন মুর্তজার আউট সুইং সহজাত, ইন সুইংটা শিখেছিলেন খেটে। সেই খাটুনির পেছনে ছিলেন রামানায়েকে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সফলতম বোলার অনেকবার বলেছেন, তার সাফল্যের পেছনে বড় অবদান রামানায়েকের। রুবেল হোসেনকে নিয়েও কম খাটেননি তিনি।
হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের কোচ হয়ে আসার পর বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় পেসারদের নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন রামানায়েকে। তার হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছিল শরিফুল, তানজিম, শাহিন আলমদের। সেই পরিশ্রমের ফল বিশ্বকাপে পায় বাংলাদেশ।
উইকেট হয়তো খুব বেশি পাননি শরিফুল-তানজিমরা, কিন্তু ম্যাচের সুরটা ঠিক করে দেন তারাই। শরিফুলের লাইন-লেংথ ছিল নিখুঁত। পাওয়ার প্লেতে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ডানা মেলতে দেননি বাঁহাতি এই পেসার। পুরনো বলে ছিলেন সমান কার্যকর।
এমনিতে নতুন বলে বেশি কার্যকর ছিলেন তানজিম। বিশ্বকাপের আগে মূল স্ট্রাইক বোলার ছিলেন তিনিই। বিশ্বকাপে পান নতুন ভূমিকা। মাঝের ওভারগুলোতে রানের গতিতে বাঁধ দেওয়ার কাজটা করেন দারুণভাবে। তার বোলিং ইয়ান বিশপকে মনে করিয়ে দিয়েছে রুবেলের কথা।
বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার মাহবুবুল আলম কাজ করেছেন শরিফুল-তানজ়িমদের নিয়ে। তবে মূলটা করেছেন রামানায়েকে।
শ্রীলঙ্কান কোচ রামানায়েকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে জানিয়েছেন, ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে বাংলাদেশি তরুণ পেসারদের আক্রমণাত্মক মনোভাব মনে ধরেছে তার।
“তারা (পেসাররা) যা করেছে, ফলাফল তাদের হয়ে কথা বলছে। আমি অনেক খুশি। তাদের সঙ্গে যতদিন কাজ করেছি মনে হয়েছে তারা দিনকে দিন উন্নতি করছে। অবশেষে তরুণ বয়সে আপনি যেটা সর্বোচ্চ অর্জন করতে পারবেন, ওরা সেটা করেছে। তারা যেভাবে বোলিং করেছে, মনোভাব ছিল অসাধারণ। আগ্রাসী মনোভাব, প্রতিপক্ষের দিকে ধেয়ে যাওয়া; আমার এই আক্রমণাত্মক মনোভাব পছন্দ হয়েছে।”
“আমি এদের সঙ্গে দুই থেকে আড়াই বছর ধরে কাজ করছি। যখন তারা ১৭-১৮ বছর বয়সী, তখন থেকে তাদের দেখছি। আমি শুধু তাদের স্কিল নিয়ে নয়, মানসিক দিক, ফিটনেস, সব কিছু নিয়েই কাজ করেছি।”
“শরিফুল আমার সঙ্গে ‘এ’ দলেও ছিল। সে ‘এ’ দলের হয়ে খেলেছে, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার আগে (হাসি)। শুধু সাকিব নয়, আমাদের দলে শাহীন আলম ছিল; এমন আরও অনেকে ছিল যারা খেলেনি তবে সমানভাবেই প্রতিভাবান। তবে আপনি ভবিষ্যতের জন্য কিছু ফাস্ট বোলার পেতে যাচ্ছেন।”
“এই দলের পেসাররা অনেক সম্ভাবনাময়, প্রতিভাবান। আমি আশা করছি, এরা ভবিষ্যতে জাতীয় দলের হয়ে খেলবে।”