রোহিঙ্গাবোঝাই আরও ২ ট্রলার বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিল মিয়ানমার

222-samakal-5e973ade7a8a5

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে একটি ট্রলার থেকে উদ্ধার ৩৯৬ রোহিঙ্গাকে ১৪ দিনের সংঘনিরোধে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার ক’দিন না যেতেই আরও পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা নিয়ে দুটি ট্রলার বাংলাদেশ অভিমুখে ঠেলে দিচ্ছে মিয়ানমার। কক্সবাজারের বালুখালী ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের স্বজনরা এ খবর দিয়েছে।

রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, করোনা মহামারির কারণে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা নিয়ে দুটি ট্রলারকে তাদের সীমানায় ঢুকতে দেয়নি। জাহাজ দুটি ১৫ দিন ধরে মিয়ানমার জলসীমায় রয়েছে। মিয়ানমার নৌবাহিনী রোহিঙ্গাবোঝাই ট্রলার দুটো বাংলাদেশ জলসীমার দিকে ঠেলে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘ফরটিফাই রাইটস’ শুক্রবার একটি বার্তা সংস্থাকে সাগরে রোহিঙ্গাবোঝাই দুটি নৌকা ভাসছে- এমন খবর দিয়ে বলেছে, ভাসমান নৌকাগুলো উদ্ধারের জন্য আঞ্চলিক সরকারগুলোর সমন্বিত চেষ্টা দরকার।

সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথু স্মিথ বলেন, রোহিঙ্গাদের স্বল্প রসদপাতি দিয়ে নৌযানকে অনিশ্চিত সমুদ্রযাত্রায় ঠেলে দেওয়া বেআইনি এবং মৃত্যুদণ্ডের মতো।

ফরটিফাই রাইটস আরও জানায়, গত ১৬ এপ্রিল দুই শতাধিক রোহিঙ্গাবোঝাই আরেকটি ট্রলার মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের জলসীমায় শনাক্ত করেছে। প্রয়োজনীয় রসদ দিয়ে ট্রলারটি গভীর সমুদ্রের দিকে ফেরত পাঠিয়ে দেয় বলে সংগঠনটির দাবি।

বুধবার রাতে টেকনাফ উপকূলে একটি ট্রলার থেকে ৩৯৬ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা। দুই মাস আগে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল এ রোহিঙ্গারা। তারা দেশটির উপকূলে ভিড়তে পারেনি। মালয়েশিয়া ট্রলারে রসদপাতি দিয়ে গভীর সমুদ্রে ঠেলে দিয়েছিল। পরে ট্রলারটি থাই উপকূলে ভেড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এরপর মিয়ানমার জলসীমায় ঢুকে পড়লে সে দেশের নৌবাহিনী রোহিঙ্গাবোঝাই ট্রলারটি বাংলাদেশ সমুদ্রসীমায় ঠেলে দেয়। কিন্তু এর আগেই অনাহারে অসুস্থ হয়ে ট্রলারে মারা গেছে অর্ধশত রোহিঙ্গা।

এদিকে, উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, মার্চের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সমুদ্র উপকূল থেকে রোহিঙ্গাবোঝাই অন্তত চারটি বড় কার্গো ট্রলার ছেড়ে যায়। এতে এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে। এর মধ্যে একটি ট্রলার বুধবার রাতে টেকনাফ উপকূলে ফিরে এসেছে।

ট্রলার থেকে উদ্ধার রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, প্রায় দুই মাস তারা সাগরে ভেসেছে। পরে মিয়ানমার নৌবাহিনীর সহযোগিতায় দালালরা তাদের টেকনাফ উপকূলে তুলে দিয়েছে। এরপর দালালরা পালিয়ে গেছে।

Pin It