দোকান-বাজার খোলার সময় বেঁধে দিল পুলিশ

shafiqul-islam-dmp-commissioner-300120-05

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রাজধানীর সব দোকান, সুপারশপ ও কাঁচাবাজার খোলার রাখার সময় বেঁধে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম সোমবার বিকালে  বলেন, প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দোকান, কাঁচাবাজার ও সুপারশপ খোলা রাখা যাবে বলে তারা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন জনের অনুরোধে সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সন্ধ্যা ৭টা করা হয়েছে।

তবে রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার দোকানগুলো সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এরপরে অলিগলির কোনো দোকান খোলা যাবে না।

সন্ধ্যার পর শুধু ওষুধের দোকান খোলা রাখা যাবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, “ওষুধের দোকান ছাড়া অন্য কেউ কোনো দোকান খোলা রাখলে তাকে আমরা জনস্বার্থে বন্ধ করতে বাধ্য করব।”

সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

শফিকুল ইসলাম বলেন, “ওষুধের দোকানসহ জরুরি সেবা খাতগুলো চালু থাকবে। বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

“সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে, না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়।”

দোকান, সুপারশপ, কাঁচাবাজার সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বন্ধ রাখার বিষয়ে ইতোমধ্যে পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

বিশ্বজুড়ে মহামারীর রূপ নেওয়া অতি সংক্রামক নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে ‘লকডাউন’ চলছে। এই সময়ে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস, আদালত, শপিংমল, কল-কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের যান চলাচল।

ভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষায় সবাইকে ঘরে থাকতে সরকার আহ্বান জানালেও ঢাকা শহরের অলিগলিতে মানুষের চলাচল দেখা যাচ্ছে। নিয়মিত মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ে সমবেত হচ্ছেন মুসল্লিরা।

অপরদিকে গত তিন দিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে শতক ছাড়িয়েছে। গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর এতদিন দিনে দুই-তিন জন করে রোগী শনাক্ত হলেও শনি, রবি ও সোমবার হয়েছে যথাক্রমে ৯, ১৮ ও ৩৫ জন।

এখন দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৩ জন, আর এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের।

এই প্রেক্ষাপটে ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ডিএমপি কমিশনারের এই নির্দেশনা আসার কয়েক ঘণ্টা আগে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে সাধারণ নাগরিকদের মসজিদসহ কোনো ধরনের ধর্মীয় উপাসনালয়ে না গিয়ে বাসায় থেকে নামাজ ও প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে।

সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে মসজিদ বন্ধের সিদ্ধান্ত আসার কয়েক সপ্তাহ পরে বাংলাদেশ সরকার একই ধরনের নির্দেশনা দিল।

এ আদেশ অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

Pin It