ঢাকার আদালতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে আসামিদের জামিন শুনানি গ্রহণের জন্য গঠিত ভার্চুয়াল কোর্টের কার্যক্রম আংশিক শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রথম দিনে ঢাকার পাঁচটি ভার্চুয়াল আদালতে ৩৮ জন হাজতি আসামির জামিন আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। অধিকাংশ মাদক ও চুরির মামলায় জামিন দেয়া হয়েছে। আসামিরা দীর্ঘদিন হাজতে থাকায় তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টে ঢাকায় প্রথম দিনে জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অপরাধ বিবেচনায় আসামিদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মাদক মামলায় যাদের কাছ থেকে কম মাদক উদ্ধার হয়েছে, তাদের জামিন দেয়া হয়েছে। আর দীর্ঘদিন ধরে যে সব আসামি হাজতে রয়েছে তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
ভার্চুয়াল একটি কোর্টের দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশে। মঙ্গলবার প্রথম দিন এই আদালতে ৯ মামলায় ৯ আসামির জামিন আবেদন করা হয়। এর মধ্যে চার মামলায় বিচারক চারজনের জামিন মঞ্জুর করেন। মামলাগুলো অধিকাংশ মাদকের। আর বাকি ৫ টি মামলার শুনানির জন্য পরবর্তীতে তারিখ ধার্য করেন আদালত।
এদিকে নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল, বিশেষ জজ আদালত, দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালসহ অন্যান্য আদালতে জামিনের আবেদন ও শুনানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আদালতগুলোতে শুনানি গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হলে পদ্ধতিগত জটিলতায় আইনজীবীরা আবেদন করতে না পারায় শুনানি হয়নি।
সিএমএম আদালত ঢাকা মহানগরীর ৫০টি থানাকে চার ভাগে ভাগ করে চারটি ভার্চুয়ালকোর্ট হাজতি আসামিদের জামিন শুনানির কার্যক্রম শুরু করেছে। নির্ধারিত ভার্চুয়াল কোর্টেও ই-মেইল অথবা ই-ফাইলিং’র মাধ্যমে আবেদন প্রেরণ করার জন্য বলেছেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এম জুলফিকার হায়াত।
মঙ্গলবার ভার্চুয়াল কোর্ট-২ এর বিচারক ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী তিনটি মামলায় ১৪ জন আসামিকে শুনানি শেষে জামিন দিয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সিএমএম আদালতের বিভিন্ন থানার তদন্তনাধীন মামলার হাজার হাজার আসামি কারাগারে আছেন। অনেক আইনজীবী প্রক্রিয়াগত জটিলতার জন্য আবেদন করতে পারেনি। পদ্ধতিগত জটিলতায় ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভার্চুয়াল কোর্ট বাতিল করে স্বাভাবিকভাবে আদালত খুলে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী খান হাসান জানান, ভার্চুয়াল কোর্ট বিচারঙ্গনে একটি নতুন পদ্ধতি। যে প্রক্রিয়ায়ই হোক আইনজীবীদের আদালতে আসতেই হচ্ছে। শুধু বিচারকের সামনে যেতে হচ্ছে না। অধিকাংশ আইনজীবীই প্রক্রিয়াটা বুঝতে সময় লাগছে।
আইনজীবীরা জানান, ভার্চুয়াল কোর্টে ইমেইলে আবেদন পাঠাতে হলেও অন্যকে দিয়ে আবেদন কম্পোজ করতে হবে। এরপর অনেক আইনজীবী ভিডিও কনফারেন্স ঠিকমতো বোঝেন না। সবার হাতে স্মার্টফোনও নেই। এ প্রক্রিয়ায় তাদের পক্ষে শুনানি করা সম্ভব নয়। তাই স্বল্পপরিসরে আদালত খুলে দেওয়া হোক। সেখানে তারা শারীরিক দূরত্ব মেনে শুনানির ব্যবস্থা করবেন।