মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে উপজেলার মেদিনীমন্ডলে বুধবার রাতে পদ্মা সেতুর রেলওয়ে প্রকল্পে শ্রমিকদের ক্যাম্পে গার্ডের গুলি ও আঘাতে ৮ শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ৫ শ্রমিকের পায়ে গুলি লেগেছে। তবে তারা শঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
আহতরা হলেন, জাকির, পারভেজ, সুমন, রাজু, নাঈম, রাসেল, শুভ ও আলী মুনসুর।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক প্রজেক্টের (পিবিআরএলপি) প্রকল্প পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী গোলাম ফখরুদ্দিন এ চৌধুরী জানান, চীনা ঠিকাদার সিআরইসির অধীনে পরিচালিত ক্যাম্পটিতে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে অসন্তোষের এক পর্যায়ে ঠিকাদারের গার্ড গুলি ছুঁড়ে। এতে ৫ শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরে পাশের ক্যাম্প থেকে সেনা সদস্য এবং স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পিডি আরও জানান, পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। বিষয়টি নিয়ে সচিব এবং পিডির সঙ্গে কথা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে বৃহস্পতিবার প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থলে আসবেন।
প্রকল্পের আরেক দায়িত্বশীল জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের (সিআরইসি) অধীনে ক্যাম্পটিতে ২০০-২৫০ শ্রমিক রয়েছেন। সেখানে তাদের বেতন ভাতার পরিশোধের পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ছিল। কিন্তু যথাযথভাবে পাওনা পরিশোধ না করার কারণে এই অসন্তোষ দেখা দেয়। এটি চীনা ঠিকাদারে ম্যানেজম্যান্টের ব্যর্থতা।
শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শাহ আলম রাত ১১টায় জানান, এ পর্যন্ত আহত ৮ জনকে ষোলঘর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছে। তবে এদের কারও অবস্থাই আশঙ্কাজনক নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, রাতে শ্রমিকেরা তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে ক্যাম্প থেকে পাশে পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া-১ এ যেতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মীরা বাঁধা দেয় ও শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায়। এতে আটজন শ্রমিক আহত হয়। ঠিকাদারে লোকজন রড দিয়ে পেটায়। ওই শ্রমিক আরও জানান, চুক্তি ছিল ঠিকাদার থাকা খাওয়া বাদে প্রত্যেক শ্রমিককে মজুরি বাবদ প্রতিদিন ৩শ’ টাকা দেবেন। কিন্তু গত ২০ এপ্রিলের পর থেকে শ্রমিকদের কোনো টাকা দেয়নি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর আগে থেকে শ্রমিকদের টাকা-পয়সা ও থাকা খাওয়া নিয়ে ঝামেলা করে আসছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।