শর্তহীন জামিন পেলে লন্ডন যেতে চান খালেদা জিয়া

image-178765-1598737379

১৭ বছরের সাজা স্থগিত করে নিঃশর্ত স্থায়ী জামিন চান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। জামিন লাভের পর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য যেতে চান লন্ডন। এজন্য খালেদা জিয়ার পক্ষে তার ভাই শামীম এস্কান্দার লিখিতভাবে আবেদন করেছেন সরকারের কাছে। গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা ঐ আবেদন করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে সাজা স্থগিতের আবেদন আমরা পেয়েছি। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যে কারণে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

আবেদনে করোনাকালীন দুর্যোগে গত ২৫ মার্চ থেকে ছয় মাসের জামিনে থাকা খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়নি এবং তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য শারীরিক অসুস্থতার কোনো পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়। আবেদনে বলা হয়, এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে যাওয়া অফিস-আদালতসহ গণপরিবহন ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসতে শুরু করেছে। এতে অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিত্সা ও এসংক্রান্ত শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। খালেদা জিয়ার বয়স, শারীরিক অসুস্থতা ও মানবিক বিবেচনায় তার স্থায়ী মুক্তির জন্য আবেদন করা হলো। আবেদনে বিদেশে উন্নত চিকিত্সার জন্য যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা না দেওয়ারও কথা বলা হয়। বেগম জিয়ার আইনজীবী জানান, সরকার চাইলে সাজা মওকুফও করতে পারেন। এ পর্যন্ত জামিনের কোনো শর্তই ভঙ্গ করেননি।

আরও পড়ুন: এক মাসে বাজার মূলধন ফিরেছে সাড়ে ৮৬ হাজার কোটি টাকা

প্রসঙ্গত, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার এর আগে ছয় মাসের জন্য খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে এবং গত ২৫ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে তিনি মুক্তি লাভ করেন। সে হিসাবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ছয় মাস পূর্ণ হবে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দুই বছরেরও বেশি সময় কারাগারে ছিলেন তিনি। কারামুক্তির শর্ত হিসেবে গত প্রায় ছয় মাস গুলশানের ভাড়া বাড়ি ‘ফিরোজায়’ চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। উন্নত চিকিত্সার জন্য তিনি বিদেশে যাননি। অস্থায়ী কারামুক্তির পর তিনি কোনো রাজনৈতিক কথা বা বক্তৃতা-বিবৃতি দেননি। এমনটি আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকও করেননি। গত ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার দিনে স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন মাত্র।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি মামলা বিচারের পর্যায়ে আছে। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা ভোগ করছেন খালেদা জিয়া। দুই মামলায় তার ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। ৭৬ বছর বয়সি খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস এবং চোখ ও আর্থ্রাইটিস সমস্যায় ভুগছেন। অন্যের সহযোগিতা ছাড়া তিনি নিজে হাঁটা চলা করতে পারেন না।

এদিকে বেগম জিয়ার স্থায়ী জামিনের আবেদনের বিষয়ে কিছুই জানেন না দলের সিনিয়র নেতারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবার জামিনের আবেদনের বিষয়টি দেখছেন। শুনেছি তার পরিবার আবেদন করেছে। আশা করি সরকার উনার বয়স এবং শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে স্থায়ী এবং শর্তহীন জামিন মঞ্জুর করবেন। তাছাড়া তিনি সরকারের দেওয়া দুই শর্তের কোনোটিই ভঙ্গ করেননি। সবকিছু মানবিকভাবে বিবেচনা করে তার এই আবেদন গ্রহণ হবে বলে আমরা আশা করি।

Pin It