অনাস্থা ভোটের মুখে তেরেসা মে

Theresa-May-5c3f3c65b1901

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে বুধবার রাতে অনাস্থা ভোটের সম্মুখীন হচ্ছেন। দেশটির এমপিরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার ব্রেক্সিট চুক্তিকে বিপুল ভোটের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করার পর তাকে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাতে আধুনিক ব্রিটেনের ইতিহাসে মের সরকারকে সবচেয়ে বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে।

হাউস অব কমন্সে মের উত্থাপিত ব্রেক্সিট প্রস্তাবের বিপক্ষে ৪৩২ ভোট ও পক্ষে মাত্র ২০২ ভোট পড়ে। এর মাধ্যমে গত বছরের শেষ দিকে ব্রাসেলসে ইইউর বিশেষ শীর্ষ বৈঠকে করা ব্রেক্সিট চুক্তিটিকে এমপিরা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেন।

ভোটের পরপরই ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্যাঁ ক্লঁদ জাঙ্কার ব্রেক্সিটের বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব ব্রিটেনের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানান। সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় প্রায় শেষ হয়ে গেছে বলেও তিনি সতর্ক করেন।

ব্রিটেনের সঙ্গে স্থল সীমান্ত থাকা একমাত্র দেশ আয়ারল্যান্ড বলেছে, তারা এখন একটি ‘এলোমেলো ব্রেক্সিটের’ জন্য প্রস্তুতি জোরদার করবে।

এই ভোটে শোচনীয় পরাজয়ের পর মে তার সুর নরম করেন। তিনি আগামী সোমবার নতুন পরিকল্পনার আগেই একটি গ্রহণযোগ্য বেক্সিট চুক্তিতে উপনীত হতে সব দলের সাথে আলোচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে আনাস্থা ভোট হবে। ভোটে তিনি জয়লাভ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

এদিকে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন সাধারণ নির্বাচন চান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নিজের কনজারভেটিভ দলের এমপি ও তার মিত্র নর্দান আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি (ডিইউপি), যারা ব্রেক্সিট চুক্তির বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা কোনোভাবেই লেবার দলের সরকার চায় না।

ভোটে পরাজয়ের পর ব্রিটিশ পত্রিকাগুলো বিভিন্ন ভাষায় মের অবস্থান তুলে ধরেছে। সর্বাধিক বিক্রিত ট্যাবলয়েড সান বলেছে, মে ‘পিষ্ট’ হয়ে গেছেন। ডেইলি মেইল জানায়, ‘মে’র ক্ষমতা সুতোয় ঝুলে আছে।’ টাইমস তাকে ‘বোধশুন্য প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ব্রেক্সিটের সমর্থক বোরিস জনসন বলেন, এই ভোট মেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তার চুক্তিটির ব্যাপারে পুনরায় আলোচনার জন্য ‘ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে’।

ডিইউপি নেতা এরলেনে ফস্টার ব্রেক্সিট চুক্তির ‘মৌলিক পরিবর্তনের’ আহ্বান জানিয়েছেন। এই নারী নেত্রী বলেন, ‘আমরা আরো ভালো চুক্তি নিশ্চিতের জন্য একটি পরিকল্পনা করতে সরকারকে সুযোগ দেব।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময় আগামী ২৯ মার্চ। মঙ্গলবার রাতে পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী তেরেসা তিন দিনের মধ্যে বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপনের সুযোগ পাবেন। সেই প্রস্তাবও যদি প্রত্যাখ্যাত হয়, তবে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে হবে যুক্তরাজ্যকে।

Pin It