এনআরসি বিরোধিতার জন্য রাজনীতিতে ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী

image-391117-1612629348

ভারত জুড়ে বিতর্কিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি সমর্থনকারীদের বিরোধিতা করবেন বলেই সক্রিয়ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রনিতা দাস। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

খবরে আরও বলা হয়, অভিনেত্রী বাহা ওরফে রণিতা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ। পশ্চিমবঙ্গের মুখমন্ত্রী ‘বাহা’ চরিত্রে মুগ্ধ। পাশাপাশিই তিনি গুণগ্রাহী ওই চরিত্রের অভিনেত্রী রণিতারও।

‘ধন্যি মেয়ে’, ‘ইষ্টি কুটুম’ ধারাবাহিকের অভিনয়ের সৌজন্যে রণিতা দাস মন জয় করেছেন সিরিয়াল প্রিয় দুই বাংলার মানুষের। বিশেষ করে ‘ইষ্টি কুটুম’ ধারাবাহিকের বাহা নামটি দর্শকদের সবচেয়ে পরিচিত।

তৃণমূলে যোগ দিয়েন অভিনেত্রী রনিতা দাস বলেন, এতদিন টেলিভিশনে কাজ করে সকলের মন হয়তো জয় করেছি এবার দিদির সাথে কাজ করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। তাছাড়াও আমাদের ভাবনা চিন্তা দেশের যুব সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। দিদি আমাদের মাটির মানুষ।

রণিতা বলেন, আমরা গত ১০ বছর ধরে দিদির সঙ্গেই আছি। দিদিকে আমরা খুব ভালোবাসি। আজ থেকে আমরা তৃণমূলের সদস্য ও বাড়ির লোক হলাম। সমস্ত কাজ যা যা দায়িত্ব দেওয়া হবে তা পালনের চেষ্টা করব এবং আমরা চাই নতুন প্রজন্মও বিষয়টা বুঝুক। অন্য নেতারা আগে থেকে প্ল্যান করে বিভিন্ন জায়গায় যান, খাওয়া দাওয়া করেন। দিদি মাটির মানুষ। গাড়িতে যেতে যেতে যে কোনও চায়ের দোকানে নেমে পড়েন তিনি।

প্রসঙ্গত, ভারতজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) বিরোধী আন্দোলন চলছে। আর এ দুটো আইন ভারতের সাংবিধানিক মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মানবাধিকারকর্মীদের মতে, এর ফলে ভারতের অনেক অধিবাসীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করার চেষ্টা হচ্ছে। জোরপূর্বক অনেকের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের আওতায় পড়ে।

আসামে এনআরসির ফলস্বরূপ নাগরিকত্ব হারায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ, যা আসামের পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তোলে। এ উত্তাপের পেছনের কারণ শুধু মুসলিম বাঙালিদের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়াই নয়, বরং প্রকাশিত ওই নাগরিক নিবন্ধনে বাদ পড়েন প্রচুর বাঙালি হিন্দু, যারা অবৈধ অভিবাসী হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে যান।

বিশ্লেষকদের মতে, ধর্ম নিয়ে উন্মাদনা ও ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা বিজেপি সরকারের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রটি ধর্মনিরপেক্ষ হলেও বিজেপি সরকারের কর্মকাণ্ড তার পরিচয় দিচ্ছে না। বিতর্কিত এনআরসি আসামের পর পশ্চিমবঙ্গ ও ধীরে ধীরে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে আরোপ করা হবে বলে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যদিও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরোধিতা করেছেন। এনআরসির পর ক্যাব আইনে পরিণত করায় ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলগুলোতে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে (সিএএ) মুসলিমদের অবহেলা করা হয়েছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে গিয়ে ৬ বছর ধরে বসবাস করা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিষ্টান, শিখ, পারসি অধিবাসীরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু মুসলিমরা পারবেন না।

Pin It