করোনায় জীবন রক্ষাকারী প্রথম ওষুধ ডেক্সামেথাসন, বিশেষজ্ঞদের দাবি

2-samakal-5ee8beda97a1d

করোনা সংক্রমণের শিকার হয়ে গুরুতর অসুস্থ হওয়া রোগীদের জীবন রক্ষায় সহায়তা করতে পারে স্বল্পমূল্যের ও সহজে পাওয়া ওষুধ ডেক্সামেথাসন। যুক্তরাজ্যের একদল বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে মঙ্গলবার এতথ্য জানানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে অভাবনীয় সাফল্য এনে দিয়েছে ডেক্সামেথাসন। করোনা রোগীর চিকিৎসায় ওষুধটির স্বল্প মাত্রায় ব্যবহার দারুণ ফল দিয়েছে। ভেন্টিলেটর ব্যবহারযোগ্য রোগীদের তিন ভাগের এক ভাগ এবং অক্সিজেন দেওয়া রোগীদের পাঁচ ভাগের এক ভাগের মৃত্যুঝুঁকি কমায় ডেক্সামেথাসন।

করোনার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে যেসব ওষুষের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হচ্ছে এগুলোর মধ্যে এই ডেক্সামেথাসনও রয়েছে। গবেষকদের মতে, করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুতে যদি এই ওষুধ ব্যবহার করা হতো, তবে যুক্তরাজ্যে পাঁচ হাজারের বেশি জীবন বেঁচে যেত। দামে সস্তা হওয়ায় বেশি আক্রান্ত গরিব দেশগুলো ডেক্সামেথাসন ব্যবহার করে অনেক ভালো ফল পেতে পারে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক করোনা রোগীদের ওপর এই ডেক্সামেথাসনের ব্যবহার নিয়ে গবেষণা চালান। হাসপাতালে থাকা দুই হাজার রোগীর ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ করেন তারা। এরপর এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়নি এমন চার হাজার রোগীর সাথে তাদের তুলনা করে দেখা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনারোগীর প্রতি ২০ জনের মধ্যে ১৯ জনেরই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয় না। যারা ভর্তি হন, তাদের মধ্যেও অধিকাংশই সুস্থ হয়ে যান। এর মধ্যে কারও অক্সিজেন ও ভেন্টিলেশন দরকার হয়। এমন রোগীদের জন্যই উপকারী হিসেবে কাজ করছে ডেক্সামেথাসন।

গবেষণায় দেখা গেছে, ভেন্টিলেটর ব্যবহারযোগ্য রোগীদের এই ওষুধ ব্যবহারে মৃত্যুঝুঁকি ৪০ শতাংশ থেকে কমে ২৮ শতাংশ হয়েছে। আর অক্সিজেন দরকার- এমন রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি ২৫ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ২০ শতাংশ।

গবেষক দলের প্রধান তদন্তকারী অধ্যাপক পিটার হর্বি বলেন, করোনায় মৃত্যুহার কমাতে এটিই কার্যকরী ও একমাত্র ওষুধ এবং এটি অভাবনীয় সাফল্য। করোনায় রোগীদের ওপর ডেক্সামেথাসন ব্যবহার নিয়ে চালানো গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া অধ্যাপক মার্টিন ল্যান্ড্রেই বলেন, আর দেরি না করে হাসপাতালে চিকিৎসকের এই ওষুধ ব্যবহার করা উচিত।

করোনার রোগীদের জন্য রেমডেসিভিরের পর এবার ডেক্সামেথাসনকেই কার্যকর ওষুধ হিসেবে বলা হচ্ছে। আইসিইউতে থাকা রোগীদের এটি ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। আর অল্প ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের এই ওষুধ ট্যাবলেট হিসেবে খাওয়ানো হয়।

রিউম্যাটয়েড আর্থাইসিস ও হাঁপানির মতো রোগের চিকিৎসায় ১৯৬০ দশকের গোড়া থেকেই ব্যবহার করা হচ্ছে ডেক্সামেথাসন।

Pin It