ঘূর্ণিঝড় ফণীর সর্বশেষ

ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারের বেশি গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে ভারতের ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী।

Cyclone-FANI-Flag-1

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিন এবং আমাদের সংবাদকর্মীদের পাঠানো তথ্য থেকে এক নজরের জেনে নিন ঘূর্ণিঝড়ের সর্বশেষ খবর।

# অবস্থান: ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাত ১১টায় ফণী ওড়িশার পুরী থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, অন্ধ্রের বিশাখাপত্তম থেকে ১৭০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণপূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

আর বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদ্প্তরের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ঘূর্ণিঝড় ফণী চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৯০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৮৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

# শক্তি: ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

# আঘাত হানার সম্ভাব্য সময়: শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে গোপালপুর আর চাঁদবালির মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে ফণী। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।

প্রায় ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসের এই ঘূর্ণিঝড় পুরোপুরি স্থলভাগে উঠে আসার প্রক্রিয়া চলবে কয়েক ঘণ্টা। এরপর মুষলধারে বৃষ্টি ঝরাতে ঝরাতে এবং ঘূর্ণি বাতাসের তাণ্ডব চালাতে চালাতে ফণী অগ্রসর হতে পারে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে।

# কখন কীভাবে বাংলাদেশে: স্থলভাগে এসে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকবে এ ঘূর্ণিঝড়। পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের সময় বাতাসের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার।

এই পথ ঠিক থাকলে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বাতাসের শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলে ভারতীয় আবহাওয়াবিদদের ধারণা।

তবে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশের স্থলভাগ পার হওয়ার সময় ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

# সংকেত: ঘূর্ণিঝড় ফণী এগিয়ে আসায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা এবং সংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং নিকটবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

আর কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে আগের মতই ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বুধবার দুপুরে দেশের সবগুলো বন্দরেই ৪ নম্বর সংকেত জারি করা হয়েছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন,বাংলাদেশে মহাবিপদ সংকেত দেওয়ার সময় এখনও হয়নি। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের মতিগতি পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Pin It