চীনে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘লেকিমা’। এতে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ১০ লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে বিপজ্জনক এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওয়েনঝু নামক স্থানে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ১৪ জন নিখোঁজ আছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় লেকিমা শনিবার সকালে আঘাত হানে। চীনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাই ও তাইওয়ানের মধ্যবর্তী অনলিং নামক স্থানে এটি আছড়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে এই ঘূর্ণিঝড়কে ‘সুপার টাইফুন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে ভূমিতে আছড়ে পড়ার আগেই এটি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। ভূমি অতিক্রম করার সময় প্রতি ঘণ্টায় বাতাসের বেগ ছিল ১৮৭ কিলোমিটার।
বর্তমানে লেকিমা চীনের উত্তর সেসাং প্রদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, এটি এখন সাংহাইয়ে আঘাত করতে যাচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রচুর গাছ ভেঙে পড়েছে। ব্যাপক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। জরুরি কাজে নিয়োজিত কর্মীরা বন্যার মধ্যেও সড়ক যোগাযোগ সচল রাখতে রীতিমতো যুদ্ধ করছেন।
সাংহাই কর্তৃপক্ষ ঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে প্রায় ১ হাজার ফ্লাইট বাতিল করেছে ও শহরের ট্রেন সেবা স্থগিত করেছে। তবে তারা আশা করছে, সাংহাইয়ে আক্রমণের আগেই ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়বে। তবে এটি ভয়ংকর বন্যা সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সাংহাই থেকে প্রায় আড়াই লাখ লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সেসাং থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৮ লাখ লোক।
নিংবো শহরের ফায়ার সার্ভিসের প্রধান ফু সংইয়াং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই অঞ্চল অপেক্ষাকৃত নিচু। তাই পাহাড়ি ঢলের কারণে এসব এলাকায় ব্যাপক বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া বলছে, চলতি বছর চীনে ৯টি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। তবে এগুলোর মধ্যে লেকিমাই সবচেয়ে শক্তিশালী। প্রাথমিকভাবে লেকিমার জন্য চীন সর্বোচ্চ সতর্কতাসংকেত জারি করেছিল। তবে পরে তা কমিয়ে আনা হয়।