ছাত্রলীগের পর যুবলীগ ধরেছি: প্রধানমন্ত্রী

PM_Gonobhaban-5d83ac89a0803

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্রলীগকে সততা ও আদর্শ নিয়ে সংযমের সঙ্গে চলতে হবে। ছাত্রলীগ নিয়ে আর কোনো নালিশ (অভিযোগ) শুনতে চাই না। ছাত্রলীগের পর যুবলীগ ধরেছি। এ অবস্থায় নিজেদের ইমেজ বাড়াতে হবে। নীতি-আদর্শ নিয়ে সংযমের সঙ্গে চলতে হবে।

বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগ নেতারা গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এদিন ছাত্রলীগের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের কেন্দ্রীয়, মহানগর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতারা দেখা করতে আসেন। এ সময় তারা তাদের সাংগঠনিক নেত্রীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।

আগামী দিনের চলার পথে ছাত্রলীগ নেতাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজের অসঙ্গতিগুলো এখন দূর করব। একে একে এসব ধরতে হবে। আমি করব। জানি কঠিন কাজ, কিন্তু করব।’

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষের পাশে থাকতে হবে। সবার আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।

এ সময় ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বি এম মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি তানজিল ভূঁইয়া তানভীর, রেজাউল করিম সুমন, সোহান খান, আরিফিন সিদ্দিক সুজন, আতিকুর রহমান খান, ইশাত কাসফিয়া ইরা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরী, আরিফুজ্জামান আল ইমরান, শামস-ই-নোমান, শাকিল ভূঁইয়া, মহিউদ্দিন আহম্মেদ, বেনজীর হোসেন নিশি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবরিনা ইতি, মামুন বিন সাত্তার, সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, দক্ষিণের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ।

নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে গত শনিবার ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আল-নাহিয়ান খান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রদল একটি অযোগ্য সংগঠন: ছাত্রলীগ সভাপতি

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে নিয়ে কেউ ধৃষ্টতা দেখালে তার পিঠের চামড়া থাকবে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে এমন হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। এ সময় বিএনপিকে একটি ষড়যন্ত্রকারী দল হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ১৫ আগস্ট নিয়ে কটূক্তি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে তার গ্রেফতার ও বিএনপির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের সঞ্চালনায় এতে কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।

সমাবেশে দুদুকে উদ্দেশ করে আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘আপনি টকশোতে বড় বড় কথা বলেন। টকশোতে বড় কথা না বলে পারলে রাজপথে এসে মোকাবেলা করুন।’ তার বিরুদ্ধে জেলায় জেলায় মামলা শুরু হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শামসুজ্জামানকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’

ছাত্রদল সম্পর্কে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটি একটি অযোগ্য সংগঠন। এখানে ছাত্রদের লেশমাত্র নেই। বুড়ো-বাবাদের এই সংগঠনকে ছাত্রসমাজ বয়কট করবে, এটাই স্বাভাবিক।’

এদিকে  শুক্রবার ছাত্রলীগের প্রতিটি ইউনিট থেকে দুদুর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে উল্লেখ করেন লেখক ভট্টাচার্য। বুধবার রাতে কাউন্সিলের মাধ্যমে হওয়া ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটিকে ‘নিশি কমিটি’ হিসেবে আখ্যা দেন সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার চেষ্টা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেবে ছাত্রলীগ।

এর আগে দুদুর বক্তব্যের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। পরে সমাবেশ শেষে শামসুজ্জামানের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

Pin It