জাতিসংঘের যে প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ইঙ্গিত

image-754222-1703259973 (1)

গাজায় মানবিক ত্রাণ সহায়তা জোরদার করা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার ভোটাভুটি করেছে। দুই সপ্তাহের আলোচনা ও ভোটাভুটি নিয়ে কয়েক দিনের বিলম্ব শেষে প্রস্তাবনায় উল্লেখযোগ্য সংশোধনী আনার পরে এতে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, ওয়াশিংটন গাজা যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সর্বশেষ খসড়া প্রস্তাবনা সমর্থন করতে প্রস্তুত। খসড়া প্রস্তাবটি ‘খুবই জোরালো’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি এমন এক প্রস্তাব যেটি আমরা সমর্থন করতে পারি।’

তবে প্রস্তাবনার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ভোট দেবে নাকি ভোটদানে বিরত থাকবে তা তিনি স্পষ্ট করে বলেননি। এছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যরা, বিশেষ করে রাশিয়া প্রস্তাবনায় আনা সংশোধনীগুলো মেনে নেবে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করতে প্রস্তাবে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছে, তা নিয়ে এরই মধ্যে আপত্তি জানিয়েছে রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশ।

বিবিসি জানায়, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) গাজায় যুদ্ধ না থামলে ছয় মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি আছে বলে সতর্ক করেছে। এমন আশঙ্কার মধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গত ১৫ ডিসেম্বর গাজা নিয়ে খসড়া প্রস্তাবনা পেশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

সেই প্রস্তাবনায় গাজায় লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে অবাধে ত্রাণ ঢুকতে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। গাজায় ত্রাণ সরবরাহ একান্তভাবে জাতিসংঘের তদারকিতে রাখার ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয় এতে। পাশাপাশি সব জিম্মিকে অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্র প্রথমত এ প্রস্তাবনায় লড়াইয়ের ‘অবসান’ শব্দটি নিয়ে আপত্তি তোলে। ফলে এটি পরিবর্তন করে লড়াই ‘স্থগিত’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

দ্বিতীয়ত ত্রাণ সরবরাহ একান্তভাবে জাতিসংঘের তদারকিতে রাখার ব্যবস্থা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি তুলেছিল। কারণ এতে গাজায় ত্রাণ সরবরাহে ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ খর্ব হওয়ার আশঙ্কা ছিল (গাজায় ত্রাণ এবং জ্বালানি সরবরাহ ও বণ্টন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে ইসরাইল)। যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কারণে সেটিও পরে সংশোধন করা হয়।

এসব সংশোধনীর পর, বিশেষ করে ‘লড়াই অবিলম্বে অবসানের’ আহ্বান বাতিল হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে খসড়া প্রস্তাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা হয়। এতে খসড়া প্রস্তাবটি পাশ হওয়ার আশা জেগে ওঠে।

৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের হামলার পর থেকে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধের দুই মাস পেরিয়েছে। এখন যুদ্ধ তীব্রতম পর্বে প্রবেশ করেছে।

এ পরিস্থিতিতে গাজায় হামলা বন্ধ করা এবং গাজাবাসীর জন্য আরও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ দিতে ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।

Pin It