ডাকসু ভিপি নুরকে প্রধান আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা

nur-5e0497ab5d470

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে এবার শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার হত্যার চেষ্টা ও চুরির ধারায় এ মামলা করেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্র ডিএম সাব্বির হোসেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের একজন সক্রিয় কর্মী। তবে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা বলেছেন, যারা মার খেয়েছেন এখন তাদেরই উল্টো হত্যাচেষ্টা ও চুরির মামলায় আসামি করা হলো।

২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে ভিপি নুরের কক্ষে ঢুকে হামলা চালান মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও ছিলেন। হামলায় নুর ও তার বেশ কয়েকজন সহযোগী আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আঘাত পান কয়েকজন। নুরসহ আহত কয়েকজন এখনও চিকিৎসাধীন।

ডাকসু ভবনে হামলার ঘটনার পর নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রইচ হোসেন শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুল হক নুরসহ তার সঙ্গীদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয় সেখানে। ওই মামলায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এএসএম আল সনেট, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্যসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে আল মামুন ও তূর্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ রিমান্ডে নিয়েছে। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ মামলা করার পর দিন আহত নুরের পক্ষে মামলা করতে শাহবাগ থানায় যান ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। হামলার জন্য ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসাইনসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে সেখানে অভিযোগ করা হয়।

সর্বশেষ গত বুধবার হত্যার চেষ্টা, মারধর ও চুরির অভিযোগ এনে ডাকসুর ভিপি নুরসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী ডিএম সাব্বির। বৃহস্পতিবার সেই অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। মামলায় আরও ১০-১৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, ভিপি নুরসহ আসামিরা ২২ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় হত্যার উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিসোটা এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কর্মীদের। এতে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলামসহ আটজন গুরুতর জখম হন। এ সময় তাদের মানিব্যাগ, মোবাইল ও হাতঘড়ি ছিনিয়ে নেন আসামিরা।

নুর ছাড়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, মুহাম্মদ রাশেদ খান, এপিএম সুহেল, আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান, আবু হানিফ, আমিনুল ইসলাম, তুহিন ফারাবি, মেহেদী হাসান, নাজমুল হাসান, আয়াতুল্লাহ বেহেশতী, রবিউল হোসেন, আরিফ, সাইফুল, আরিফুর রহমান, ইয়াসিন মোল্লা, তরিকুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ হিল বাকী, আকরাম হোসেন, রাজ, আসিফ খান, সানাউল্লাহ হক, আতাউল্লাহ, সাকিল মিয়া, হাসানুল বান্না, রুবিরুল ইসলাম ও আরিফুল ইসলাম।

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার আলম রিশাদ বলেন, ‘নুরের বিরুদ্ধে মামলার বাদী মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের কর্মী। চেতনার জায়গা থেকে নুরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক দীন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘অভিযোগ দেওয়ার পর তদন্ত করে মামলা করা হয়। এক্ষেত্রে তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের দমানোর একটি কৌশল। ভিপি নুরসহ যারা হামলার শিকার, তাদের অনেকেই এই মামলার আসামি।’

পুলিশের রমনা জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার এসএম শামীম বলেন, ডাকসুর ঘটনায় দু’পক্ষ মামলা করেছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে। আর সিসিটিভির ফুটেজ উদ্ধারে প্রকৌশলীদের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।

Pin It