নিউজিল্যান্ডের কাছে নাস্তানাবুদ অস্ট্রেলিয়া

image-608235-1666435076

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এমন দুর্দান্ত খেলল কিউইরা, যেন সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড অসিদের চেয়ে বেশি পরিচিত নিউজিল্যান্ড দলের।

বিশ্বকাপ সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং পেয়ে কামিন্স-স্টয়নিসদের রীতিমতো তুলোধোনা করলেন দুই কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে।

দুই ওপেনারের টর্নেডো ব্যাটিংয়ে ভর করে মাত্র ৩ উইকেটে ২০০ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় নিউজিল্যান্ড।

আর ২০১ রানের তাড়ায় ব্যাট হাতে নেমে শুরু থেকেই নড়বড়ে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। ১৭.১ ওভারে ১১১ রানে গুটিয়ে গেছে অসিরা।

ফলে ১৭ বল হাতে রেখে ৮৯ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দারুণ সূচনা করল কেন উইলিয়ামসনের দল।

দলের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই অসি শিবিরে আঘাত হেনেছেন কিউই পেসার টিম সাউদি। অস্ট্রেলিয়ার সেরা ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের স্টাম্পই উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।

চতুর্থ ওভারে সান্টনারের শেষ বলে এক্সট্রা কভারে উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন আরেক ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ। অধিনায়ক করতে পেরেছেন ১১ বলে ১৩ রান।

পরের ওভারেই মিচেল মার্শকে ফিরিয়েছেন সাউদি। তার পেসে টাইমিং হয়নি মার্শের। বল উঠে যায় আকাশে। দুর্দান্ত ক্যাচ লুফে নেন জিমি নিশাম। মার্শ ফিরেছেন ১২ বলে ১৬ রানে।

পাওয়ার প্লের আগের ওভারেই ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি অসিরা।

দলীয় সংগ্রহ ৫০ পার হতেই চোখ ধাঁধানো ক্যাচে অলরাউন্ডার মার্কাস স্টইনিসকে সাজঘরের পথ দেখান ফিলিপ। সান্টনারের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন স্টয়নিস। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৭ রান।

১০ ওভারে ৪ উইকেট খুইয়ে ৬২ রান তুলে অস্ট্রেলিয়া। ততক্ষণে অনেক পিছিয়ে পড়ে অসিরা। জয়ের জন্য বাকি ৬০ বলে প্রয়োজন পড়ে ১৩৯ রান।

এ পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর বদলে পরের ওভারের দ্বিতীয় বলেই উইকেট দিয়ে আসেন টিম ডেভিড। সান্টনারের বলে নিশামের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৮ বলে ১১ রান করেন ডেভিড।

১৩তম ওভারে ফার্গুসনের প্রথম শিকারে পরিণত হন অসি উইকেটকিপার-ব্যাটার ম্যাথিউ ওয়েড। কিপার কনওয়ের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে তিনি করেন মাত্র ২ রান।

১৬তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় সংগ্রহ ১০০ ছাড়ালেও ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে অসিরা।

এ পর্যায়ে ৩০ বলে ১০৪ রান দূরে দাঁড়িয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া; যা টেলএন্ডারদের দ্বারা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। জয়ের অপেক্ষায় শুধু প্রহর গুনতে থাকেন নিউজিল্যান্ড সমর্থকরা।

১৭তম ওভারে এসে ট্রেন্ট বোল্টের পেসে মিচেল স্টার্ক (৪) ও অ্যাডাম জাম্পা (০) সাজঘরে ফিরেছেন। ১৮তম ওভারে এসে প্রথম বলে একাই লড়তে থাকা প্যাট কামিন্সকে ফেরান সাউদি। ১৮ বলে ২১ রানে থামেন কামিন্স। ফলে স্কোরবোর্ডে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ থেমে যায়।

কিউই বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল হয়েছেন টিম সাউদি। ২.১ ওভার করে মাত্র ৬ রান দিয়ে শিকার করেছেন তিন উইকেট। সাউদির সমান উইকেট শিকার করেছেন মিচেল সান্টনারও। তবে রান দিয়েছেন ৩১। দুটি উইকেট পেয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট। ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে একটি উইকেট পেয়েছেন স্পিনার ইশ শোধি।

এর আগে ব্যাট হাতে নেমে বিধ্বংসী চেহারায় হাজির হন দুই কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে। কামিন্স-স্টার্কদের তুলোধোনা করে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৬৫ রান তোলেন কিউইরা।

৩ ছক্কা আর ৫ বাউন্ডারিতে মাত্র ১৬ বলে ৪৬ রান করে আউট হন অ্যালেন।

আরেক ওপেনার কনওয়ে তো আরেক কাঠি সরেশ। ২ ছক্কা আর ৭ বাউন্ডারিতে মাত্র ৫৮ বলে ৯২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন তিনি।

পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে জশ হ্যাজেলউডকে তেড়েফুড়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ফিন অ্যালেন। ডেভন কনওয়ের সঙ্গে ফিনের ২৫ বলে ৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে।

১১তম ওভারের প্রথম বলে স্টয়নিসকে ছক্কা হাঁকিয়ে দলীয় সংগ্রহ ১০০ পার করেন ফিনের পরে নামা কেন উইলিয়ামসন।

১৩তম ওভারে কনওয়ের সঙ্গ ছাড়েন কিউই অধিনায়ক। অ্যাডাম জাম্পার স্পিনে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে উইলিয়ামসনের ব্যাট ছুঁয়ে আসে ২৩ বলে ২৩ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস। কনওয়ে-উইলিয়ামসন ৫৬ রানের জুটি গড়েছেন।

অধিনায়কের বিদায়ের পর ফিলিপকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন কনওয়ে। ১৬তম ওভারের শেষ বলে হ্যাজেলউডের বাউন্সারে কুপোকাত হন ফিলিপ। ব্যক্তিগত ১২ রানে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফিরেন তিনি।

১৬ ওভারে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান। শেষ ৪ ওভারে জিমি নিশামকে সঙ্গে নিয়ে ৪৮ রান যোগ করেন কনওয়ে। ১৩ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন নিশাম।

Pin It