প্রথমবার ৩ লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায়

national-board-revenu-bhaban-13082020-03

বিদায়ী অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে মুল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট থেকে।

২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ৩ লাখ ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব হয়েছে। এর আগে দেশের ইতিহাসে রাজস্ব সংগ্রহ কখনো তিন লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়নি।

গত অর্থবছরের এই আহরণ ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৪০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বা ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল।

তবে রাজস্ব্ আদায়ের এই রেকর্ড লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ২৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা কম। গত অর্থবছরে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সরকারের।

জানতে চাইলে এনবিআর এর গবেষণা ও পরিসংখ্যান অনুবিভাগের মহাপরিচালক ড. এ কে এম নূরুজ্জামান বলেন, “এনবিআর এবার প্রথমবারের মতো ৩ লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করেছে।”

আগামী ২৮ জুলাই এনবিআর চেয়ারম্যান আনুষ্ঠানিকভাবে গত অর্থবছরের রাজস্ব আহরণের তথ্য গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরতে পারেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এখনো কিছু রাজস্ব গত অর্থবছরের হিসাবে যুক্ত হচ্ছে।”

এ বিষয়ে এনবিআর এর গবেষণা ও পরিসংখ্যান অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, গত অর্থবছরে প্রায় ৩ লাখ ২০০ কোটি টাকার মতো রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি জানান, গত অর্থবছর সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৮ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে মুল্য সংযোজন কর (মুসক) বা ভ্যাট থেকে। আগের অর্থবছরের তুলনায় যা ১১ শতাংশ বেশি।

২০২০-২১ অর্থবছরে ভ্যাট থেকে মোট আদায় হয়েছিল ৯৭ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।

গেল অর্থবছরে আয়কর থেকে মোট আদায় হয় ১ লাখ ২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের তুলনায় যা ১৭ হাজার ১১৬ কোটি টাকা বা ২১ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরে আদায় হয়েছিল ৮৫ হাজার ২২৪ কোটি টাকা।

এনবিআর এর শুল্ক বিভাগের (কাস্টমস) একজন সদস্য বলেন, গত অর্থবছরে শুল্ক বিভাগ থেকে আদায় হয়েছে প্রায় ৮৯ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা।

এই খাত থেকে গত অর্থবছরের আদায় ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরে শুল্ক খাত থেকে আদায় হয়েছিল ৭৭ হাজার কোটি টাকা।

এনবিআর এর সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মজিদ  বলেন, “তিন লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আহরণ একটা ল্যান্ডমার্ক। এ জন্য এনবিআরকে সাধুবাদ দিতে হবে।”

তবে সংস্থাটি এবারও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে উল্লেখ করে চলতি অর্থবছরের জন্য নির্ধারণ করা ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আব্দুল মজিদ বলেন, “এনবিআর এর বিদ্যমান কাঠামো দিয়ে এই টার্গেট পূরণ করা সম্ভব নয়। এই টার্গেট পূরণ করতে হলে এনবিআর এর অবকাঠামো শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে।”

Pin It