এবার ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ কমেছে। দেখা গেছে জাতীয় বাজেটের সবচেয়ে কম বরাদ্দ হচ্ছে এ খাতটিতে। এতে করে ধীরে ধীরে সাংস্কৃতিক চর্চা কমে যাবে বলে মন্তব্য করছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষেরা।
নতুন প্রস্তাবিত বাজেটে গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৫০ কোটি টাকা কম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে। যা মূল বাজেটের ০.১ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ বাজেট উপস্থাপন করেন। এটি দেশের ৪৮তম এবং বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট। ২০১৯-২০ এর প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫৭৫ কোটি টাকা। তবে গত অর্থবছরের এই খাতে প্রস্তাবিত বাজেটে ছিল ৫১০ কোটি টাকা আর সংশোধিত বাজেটে ছিল ৬২৫ কোটি টাকা।
এদিকে সংস্কৃতি খাতের বাজেট নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এ অঙ্গনের বিশিষ্টজনরা। বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ কম নিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, সংস্কৃতি খাতে যে বাজেট এবার প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে আমরা হতাশ। হতাশ এই কারণে যে, একটি বাজেটে তো সরকারের নীতি আদর্শ এর প্রতিফলন ঘটে। সরকার একদিকে বলছে আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ সংস্কৃতি বান্ধব জাতি, মানুষে মানুষে মৈত্রী বন্ধন গড়ে তুলতে চাই, কিন্তু বাস্তবতা হলো বাজেটে সরকারের সেই সব কথার প্রতিফলন মোটেও ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, বাজেটে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তাতে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তোলার জন্য যে প্রণোদনা দরকার এই বরাদ্দে তা কখনো সম্ভব নয়। যার কারণে আমাদের প্রস্তাবনা ছিলো জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে ১ শতাংশ সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ দেয়ার। সেটা না হলে পুরো দেশে সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে কথা বলেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। তিনি বলেন, আমি সবসময় বলে আসছি মূল বাজেটের অন্তত ১ শতাংশ যেন সংস্কৃতি খাতের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে এটাও দেখলাম না। কিন্তু সাংস্কৃতিক জাগরণের লক্ষ্যে দেশব্যাপী যে উন্নয়ন হওয়া প্রয়োজন সেটা এই এই বরাদ্দে সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দ ছিল ৪ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের জন্য ৫০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। যা ছিল মূল বাজেটের ০.১০৯ শতাংশ।