বিব্রত হলেও বিচলিত নয়: ইসি রাশেদা

image-604096-1665415822

দেশের সব ডিসি ও এসপিদের নিয়ে বৈঠকে হইচই’এর ঘটনায় বিব্রতবোধ করেছেন নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা। তবে এ ঘটনায় বিচলিত নন তিনি।

সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা জানান, ওই ঘটনায় বিব্রত হলেও বিচলিত নন।

তিনি বলেন, ‘এভাবে হইচই করাটা তাদের ঠিক হয়নি। ওই ঘটনায় টু খারাপ লাগছে। বিব্রত তো বটেই কারণ ওরকম একটা ঘটনা কে চায়? মাথার মধ্যেই তো আনতে পারিনি- ওরকম একটা পরিস্থিতি তৈরী হবে। যেটা হয়ে গেছে, তা নিয়ে আমরা এত বিচলিত না। বিচলিত হওয়ার কোন কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’ তবে ডিসি এসপিদের সঙ্গে নির্বাচব কমিশনের কোনো বিতন্ডা নেই বলে জানান তিনি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমানের বক্তব্য অসত্য নয় বলে উল্লেখ করে তিনি। যেভাবে বলা হয়েছে সে ধরনটা হয়ত তাদের ভালো লাগেনি। যে প্রসঙ্গ নিয়ে হঠাৎ উত্তেজনাকর অবস্থার সৃষ্টি হলো তা যে খুব মিথ্যে তা কিন্তু না। প্রসঙ্গগুলো যে আমাদের সমাজে নাই তা কিন্তু না। প্রসঙ্গগুলো সত্য৷ হয়তো বলার ধরণটা ওনারা নিতে পারেননি।

তিনি বলেন, ‘একটা বিচ্ছিন্ন বিষয় নিয়ে রিয়েক্ট করার মানেই এই না যে ওনারা সার্বিক দায়িত্ব থেকে সরে যাবেন। ওনারা বলেছে ইসি যেভাবে নির্দেশনা দিবেন সেভাবে কাজ করবে। বিচ্ছিন্ন বিষয়ের জন্য তারা আমাদের সহযোগিতা করবে না এটা আমি বিশ্বাস করি না। ’

চলমান জাতীয় সংসদের দুটি উপনির্বাচন, জেলা পরিষদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন উপলক্ষ্যে শনিবার দেশের সব ডিসি ও এসপিদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন।

এ বৈঠকে নির্বাচনে বরাদ্দ বাড়াতে কয়েকজন ডিসি দাবি জানালেও চলমান জেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণ বিধি লংঘন নিয়ে বক্তব্য না রাখায় হতাশা ব্যক্ত করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান।

তিনি অভিযোগ করেন, অনেক ডিসি ও এসপি স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কথামতো কাজ করেন। এ কারণে আচরণ বিধি লংঘনে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেটদের যাতায়াতে যে জ্বালানি দেওয়া হয় তার খরচের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তার এ বক্তব্যের পরই হইচই করেন ডিসি ও এসপিরা। এক পর্যায়ে তিনি বক্তব্য শেষ না করেই চেয়ারে ফিরে যান। ওই ঘটনায় দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নির্বাচন কমিশনার ও ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমানের ওই বক্তব্যে এভাবে ডিসি ও এসপিরা প্রতিক্রিয়া জানাবেন তা তাদের ভাবনাতেও ছিল না। জেলা পরিষদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ডিসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত এসপিরা নির্বাচনে নিরপেক্ষ থাকার কঠোর বার্তা নিয়ে যাবেন- এমন প্রত্যাশা ছিল নির্বাচন কমিশনের।

কিন্তু ডিসি-এসপিদের হইচইয়ের মধ্যে একজন কমিশনারের বক্তব্য থেমে যাওয়ার ঘটনায় অন্তত তিনজন নির্বাচন কমিশনার বিব্রতবোধ করছেন। তাৎক্ষনিক ওই ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল তাদেরকে হাত নেড়ে থামাতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিনি কঠোর অবস্থান নেননি।

সেখানে উপস্থিত তিনজন কমিশনারের কেউ এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া দেখাননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। সোমবার তিনি অফিসও করেননি।

এদিকে শনিবারের ওই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানায়নি নির্বাচন কমিশন। এমনকি কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। এ সংক্রান্ত কোনো নথিও উপস্থাপন করেনি ইসি সচিবালয়।

Pin It