ব্যাংকের সুদহারে সীমা বেঁধে দেওয়া হবে: অর্থমন্ত্রী

kamal--5d47032e0949c

সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের ঋণ ও আমানতে সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, ঋণে ৯ শতাংশ এবং আমানতের সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদহার নির্ধারণ করা হবে। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোতে পাঠাবে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের লাইসেন্স দেয় সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার লাইসেন্স বাতিল করার ক্ষমতাও তাদের আছে। সুতরাং বেঁধে দেওয়া সুদহার না মেনে ব্যাংকগুলো যাবে কোথায়। এ মুহূর্তে সরকারি সাতটিসহ ১৬টি ব্যাংক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ বিতরণ করছে। পর্যায়ক্রমে সব ব্যাংকে সুদহার এই পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রে প্রচুর বিনিয়োগ হওয়ায় ব্যাংকে আমানত পেতে সমস্যা হচ্ছিল। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে তার একটি অংশ এখন ব্যাংকে যাবে। সঞ্চয়পত্রে এখন আর ধনীরা টাকা রাখতে পারবে না। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় যাদের সুবিধা দেওয়ার জন্য সঞ্চয়পত্র চালু করা হয়েছিল, শুধু তারাই সেখানে বিনিয়োগ করবে। ফলে সঞ্চয়পত্রের বাকি টাকা ব্যাংকে গিয়ে তারল্য অবস্থার উন্নতি হবে।

তিনি বলেন, ‘বেশি পাওয়ার জন্য অনেকে যান লিজিং কোম্পানিতে। এখন তাদের বিষয়ে কী আর বলব।’

মন্ত্রী বলেন, ফেরত না দেওয়ার জন্য যারা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়েছেন তাদের কোনো ছাড় হবে না। তাদের অবস্থা ভালো হবে না। তবে যেসব গ্রাহক ব্যবসা করার জন্য নিয়ে আটকে গেছেন তাদের ঋণ পরিশোধে সুবিধা দেওয়া হবে। এ জন্য ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে এপিট প্ল্যান করা হয়েছে। এর ফলে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ অনেক কমে আসবে। আগামী সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের হিসাবে যা প্রতিফলিত হবে। এজন্য অক্টোবরের দিকে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিদের নিয়ে আরও একটি বৈঠক করা হবে। অবশ্য অনেকে মনে করেন, সরকার শুধু ছাড় দিয়েই যাচ্ছে। সেটা ঠিক নয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান আইনে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নির্ধারিত নেই। এর মধ্যেও যতটুকু আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নেওয়া হচ্ছে। তবে নতুনভাবে যে আইন হচ্ছে সেখানে সব কিছুর পরিস্কার বিবরণ থাকবে। এতে ব্যাংক-গ্রাহক কেউই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

তিনি বলেন, হঠাৎ করে আমাদের অর্থনীতি অনেক বড় হয়েছে। এতে করে অনেক সময় চাহিদার সঙ্গে তাল মেলানো যায়নি। ফলে কিছু সমস্যা হয়েছে। ব্যাংকগুলোতেও সমস্যা হয়েছে। এখন সেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় একটু সময় প্রয়োজন। তা ছাড়া সরকার চাইলেই একটি ব্যাংক বন্ধ করে দিতে পারে না। কেননা এখানে সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত টাকা থাকে। যে কারণে ফারমার্স, বেসিক ব্যাংককে সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

Pin It