বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিভাগীয় সমাবেশে এই অবৈধ সরকার নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করছে। শনিবার খুলনার সমাবেশকে কেন্দ্র করে গণপরিবহণ দুদিন বন্ধ করে দিয়েছে। তাতে কি লাভ হবে। মানুষ কি থেমে থাকবে? বাধা দিয়ে কোনো লাভ নেই। মানুষ দলে দলে বিভিন্নভাবে খুলনার সমাবেশে যাবেন। লাখ লাখ মানুষ হবে।’
‘অজানা ভয় থেকে সরকার এখন ঘাবরে গিয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের অবসরে পাঠাচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
‘সারা দেশে ধরপাকড়, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, জামিন বাতিল করে নেতাকর্মীদের কারাগারে প্রেরণ, পুলিশি হামলা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে’ এই সমাবেশ হয়।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের দেশ শাসনের কোনো অধিকার নেই। অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। ভালোয় ভালোয় সরে পড়ুন। নইলে দেশের জনগণ জানে কীভাবে সরাতে হয়।’
এ সময় অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের চলমান আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকারের গণবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আমাদের আন্দোলন। সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন। আমরা বলতে চাই, যেসব সহযোদ্ধা শহিদ হয়েছেন তাদের রক্ত ও আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না। আমরা তাদের হত্যার মধ্য দিয়ে এই দানবীয় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ চাই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অবিলম্বে মিথ্যা মামলা ও গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। ইতিহাস ভুলে যাবেন না। দেশের মানুষ কাউকে ক্ষমা করেনি। দেওয়ালের লিখন পড়ুন। সাধারণ মানুষের মনের ভাষা বুঝতে শিখুন। আজকে চাল, ডাল, চিনি, ডিমসহ সব পণ্যের মূল্য বেশি কেন?’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়েছে। কারণ লুট করে, মানুষের পকেট কেটে টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করছে। আর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ধৈর্য্য ধরেন, বিদ্যুৎ আছে, পাবেন। কিন্তু আমাদের তো চলে না। দিনে পাঁচ-ছয় বার লোডশেডিং হয়, মানুষ অতিষ্ঠ। বিদ্যুৎ, গ্যাস না পেয়ে দেশের কল-কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কল-কারখানা বন্ধ হলে লাখ লাখ কর্মী বেকার হবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘যেখানেই বাধা সেখানেই সমাবেশ। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা হবে সমাবেশের শহর। পুলিশ ও প্রশাসনকে বলব, আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। কারণ শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘খেলা শুরু হয়ে গেছে। আর আওয়ামী লীগ হাবুডুবু খাচ্ছে। আওয়ামী লীগ লেজ গুটিয়ে দৌড় দিচ্ছে। ৫ জনকে হত্যা করেছেন। আর যদি গুলি করা হয় প্রয়োজনে বুক পেতে দিব। কিন্তু শেখ হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী) অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। যারা সমাবেশে যাওয়ার আগেই বাস চলাচল বন্ধ করে দেন, তাদের কালো তালিকা করা হবে। আমরা অনেক সহ্য করেছি, আর নয়। আমরা যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভুইয়া, জয়নুল আবদীন ফারুক, মীর সরফত আলী সপু, নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা মহানগরের তাবিথ আউয়াল, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, রাজীব আহসান, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, শ্রমিক দলের হুমায়ূন কবির খান, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
