মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার কমেছে

PM_Cabinet-Meeting-5c4f281411fa0

গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত (ত্রৈমাসিক) মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ছিল ৬৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। অথচ এর আগের বছর ২০১৭ সালে একই সময়ে বাস্তবায়নের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। সে হিসাবে একই সময়ে বাস্তবায়নের হার ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমেছে।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে গত বছর মন্ত্রিসভায় নেওয়া ত্রৈমাসিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হারের তুলনামূলক প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া সভায় বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯-এর খসড়া চূড়ান্ত ও নীতিগত অনুমোদন এবং বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) আইন, ২০১৯-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছর ত্রৈমাসিকে নয়টি মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। ৮৩টি সিদ্ধান্তের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হয় ৫৬টি। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে ২৭টি।

তিনি আরও জানান, গত বছরের আগে ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে আটটি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়েছে। ওই সময়ে সিদ্ধান্ত হয় ৬৮টি, যার মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৫৩টি। আর ১৫টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন। বাস্তবায়নের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

শফিউল আলম আরও বলেন, গত বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত (ত্রৈমাসিক) মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঁচটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক এবং সাতটি নীতি বা কর্মকৌশল অনুমোদিত হয়েছে। জাতীয় সংসদে আইন পাস হয় ১৯টি।

সচিব বলেন, ২০১৭ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর (ত্রৈমাসিক) মন্ত্রিসভার বৈঠকে আটটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক এবং একটি নীতি বা কর্মকৌশল অনুমোদিত হয়েছিল। ওই সময়ে তিনটি আইন সংসদে পাস হয়।

মন্ত্রিসভায় রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) শ্রম আইন অনুমোদন: এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদের শেষে মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯-এর খসড়া উত্থাপিত হয়েছিল। কারখানাগুলোতে ট্রেড ইউনিয়নের আদলে ‘শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’ গঠনে শ্রমিকদের সমর্থনের হার ১০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয় মন্ত্রিসভায়। তখন সংসদ অধিবেশন বহাল না থাকায় আইনটি গত ১৫ জানুয়ারি অধ্যাদেশ আকারে জারি করে সরকার। নতুন সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের খসড়া চূড়ান্ত ও নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। অধ্যাদেশকে বিল আকারে পাসের জন্য জাতীয় সংসদে তোলা হবে।

৫০ শতাংশ বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজে আনতে হবে: মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভায় ‘বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) আইন, ২০১৯’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। যেখানে বাংলাদেশের শিপিং করপোরেশনের জাহাজে ৫০ শতাংশ পণ্য পরিবহনে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। আইনটি সংসদে পাস হলে মালিকদের তা মেনে চলতে হবে। আইন অমান্য করে জাহাজে পণ্য পরিবহন করলে তাকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মূলত আইনটি ছিল তৎকালীন (১৯৮২ সাল) সামরিক সরকারের জারি করা অধ্যাদেশ। সে অনুযায়ী সমুদ্রপথে পরিবাহিত পণ্যের ৪০ শতাংশ পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের বিধান ছিল। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্শাল ল আমলের আইনকে বাংলায় রূপান্তর করে নতুন করে করা হচ্ছে। নতুন আইনে সমুদ্রপথে পরিবাহিত পণ্যের ৫০ শতাংশ পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সচিব বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অধ্যাদেশগুলোকে আইনে পরিণত করা ও বাংলা ভাষায় রূপান্তর করতে হবে। সেই বাধ্যবাধকতা থেকেই আইনে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। অধ্যাদেশে জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণ করা ছিল না।

Pin It