মুস্তাফিজের গতিই মাশরাফির প্রাপ্তি

Mustafiz-samakal-5cef7ce6e8bbf

প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৯৫ রানের বড় হার একদিক থেকে দেখলে বিশ্বকাপের আগে একটা ধাক্কা। ব্যাটিংয়ে শেষ ২৮ ওভারে ভারতের ২৫৭ রান তুলে ফেলাটা টিম ম্যানেজমেন্টের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার উপলক্ষও বটে। এমন বড় ব্যবধানে হারের পর ব্যর্থতা নিয়ে কাটাছেঁড়া করাটাই দস্তুর। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা এ হারের মধ্যেও খুঁজে নিয়েছেন কিছুটা প্রাপ্তি। দলের পেস আক্রমণের মূল ভরসা মুস্তাফিজুর রহমানের পুরনো গতি ফিরে পাওয়া।

প্রস্তুতি ম্যাচ বলে এসব ম্যাচের জয়-পরাজয় নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না কোনো দলই। বরং নিজেদের শক্তি এবং দুর্বলতাগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়ার জন্যই প্রস্তুতি ম্যাচে সবাইকেই সুযোগ দেওয়া হয় বোলিং বা ব্যাটিং করার। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেই যেমন ৫০ ওভারের কোটা পূরণ করতে বাংলাদেশ ব্যবহার করেছে নয়জন বোলার। মাশরাফি নিজে করেছেন ছয় ওভার। তার সঙ্গে নতুন বলে শুরু করেছিলেন মুস্তাফিজ। এরপর রুবেল হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করে গেছেন।

২২ ওভার শেষে ভারতের স্কোরকার্ডে ৪ উইকেটে ১০২ রান সেই ধারাবাহিকতার প্রামাণ্য হয়েই ছিল। তবে এর পরই যেন পথ হারায় বাংলাদেশের বোলিং। লোকেশ রাহুল এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি রীতিমতো চড়াও হন সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেনদের ওপর। সুবাদে ভারত গড়ে পাহাড়সম সংগ্রহ।

শেষার্ধে বোলারদের এহেন পারফরম্যান্সের চেয়ে মাশরাফি বেশি জোর দিচ্ছেন শুরুর সময়টাতেই। ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন, শুরুর দিকে মুস্তাফিজের গতিময় বোলিংটা তার জন্য বয়ে এনেছে স্বস্তির সুবাতাস, ‘মুস্তাফিজ তার পুরনো গতিতে বল করতে পারছে দেখে আমি অনেকখানি স্বস্তি পাচ্ছি। খুব ভালো বোলিং করেছে সে, ১৪০-এর আশপাশে গতি ধরে রেখেছে। সে যদি এরকমভাবে বোলিং করে যেতে পারে, নিজের মতো করে কাজটা ঠিকঠাক করতে পারে, তাহলে আমাদের বোলিং আক্রমণ অনেকখানি শক্তিশালী হয়ে যায়। রুবেল এবং সাইফউদ্দিনের কাছ থেকেও আজ দারুণ সহায়তা পেয়েছি। আয়ারল্যান্ডে আমরা নতুন বলে ভালো করতে পারিনি। এখানে আমরা নতুন বলে নিজেদের বোলিংটা ভালো করতে চাইছিলাম। এই ম্যাচে সেটা হয়েছে।’

মুস্তাফিজের বোলিং স্বস্তি দিলেও মাশরাফিকে কিছুটা অস্বস্তিতে রেখেছে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে নিজের ষষ্ঠ ওভার করার সময়ই হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লেগেছিল মাশরাফির। ম্যাচের আগে থেকেই অবশ্য চোটটা ছিল, এমনকি প্রস্তুতি ম্যাচে তার খেলা নিয়েও ছিল অনিশ্চয়তা। তবে অনুশীলনের তাগিদ থেকেই নেমেছিলেন বোলিংয়ে। পায়ে টান লাগার পর বেশ অনেকটা সময় মাঠের বাইরেই কাটান মাশরাফি।

ম্যাচশেষে সংবাদ মাধ্যমকে চোটের ব্যাপারে বলেন, ‘এরকম চোটের ক্ষেত্রে প্রথম এক-দুই ওভার করতেই সমস্যা হয়। সেটা করে ফেলতে পারলে আর সমস্যা হয় না; কিন্তু এবার ষষ্ঠ ওভারে টান লেগে গেল। হয়তো চার-পাঁচ ওভার করেই স্পেল শেষ করতে পারতাম; কিন্তু ওই সময়টায় রোহিত আর কোহলি রান বের করার জন্য বারবার শট খেলতে চাইছিল। তখন মনে হলো, এমন আক্রমণের সামনে বোলিং অনুশীলন করা জরুরি।’

ম্যাচশেষে মাশরাফি হোটেলে ফেরার পর তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন দলের ফিজিও থিহান চন্দ্রমোহন। এসব চোটের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রায় এক সপ্তাহের বিশ্রাম দরকার হলেও মাশরাফি তা মানবেন কেন? প্রথম ম্যাচের আগে যে কয়দিন আছে, সে সময়টাতেই যথাসম্ভব ফিট হয়ে নামবেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।

Pin It