যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ঢাকায়

image-693711-1688831799

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপের মধ্যে উজরা জেয়ার এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

চার দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া।

তার সঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি ডনাল্ড লু এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) উপ-সহকারী প্রশাসক অঞ্জলী কৌরও রয়েছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে নয়া দিল্লি থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে জেয়াকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। এ সময় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন।

দ্বিপক্ষীয় অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে মানবাধিকার, শ্রমিক অধিকার, নির্বাচন ও রোহিঙ্গা ইস্যু রয়েছে তার সফরের আলোচ্য সূচিতে।

বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে বেশ সরব রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্তকারীদের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করে নতুন ভিসা নীতিও ঘোষণা করেছে দেশটি।

বছর শেষ বা আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপের মধ্যে উজরা জেয়ার এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকরা।

তবে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তার সফরের বিভিন্ন আলোচনায় নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠলেও তা মুখ্য বিষয় হবে না।

কয়েকদিন আগে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছিলেন, “আমেরিকার সাথে আমাদের অনেকগুলো মেকানিজম কাজ করছে এবং যিনি আসছেন উনি তুলনামূলকভাবে সিনিয়র।

“উনার কর্মকাণ্ডের যে এখতিয়ার ও পরিসর আছে, সেটা বেশ ব্যাপক। সুতরাং অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, তার মধ্যে একটা হয়ত থাকতে পারে নির্বাচন। সেটা আমরা রুল আউট করছি না। কিন্তু এটা যে ইলেকশন-কেন্দ্রিক ভিজিট, এটাও ভাবা ঠিক হবে না।”

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সমালোচনা করে ইতোমধ্যে বিবৃতি দিয়েছে রাশিয়া, চীন ও ইরান। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সামিল।

উজরা জেয়ার সঙ্গে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি ডনাল্ড লু।

এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সোমবার বলেন, “অন্য কোনো দেশ যখন আমাদের (আমেরিকার) নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিষয়টি আমাদের কাছে তুলে ধরে, তখন আমরা সেটাকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করি না।

“আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার সুযোগ হিসাবে আমরা সেই আলোচনাকে স্বাগত জানাই, এবং আমরা জানি না অন্য কোনো দেশ কেন আপত্তি করবে।”

নির্বাচনের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফরে এলেন।

সফরকালে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন জেয়া। তিনি আগামী ১৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

একই দিনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গেও বৈঠক হবে। প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গেও বৈঠক করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তারা আলোচনা করবেন।

মার্কিন এই প্রতিনিধিদল কক্সবাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনের কথাও রয়েছে।

Pin It