সবার কথা শুনে রাজনৈতিক দলগুলোকে ডাকবে ইসি

cec-meeting-220322-02

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচেনকে সামনে রেখে বিভিন্ন পেশার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শেষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসবে নির্বাচন কমিশন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর গত এক মাসে দুই ধাপে বিশিষ্টজনের মতামত নিয়েছে।

ধাপে ধাপে সংলাপে পাওয়া মতামতগুলোকে ‘তিন ভাবে বাছাই করা হবে’ বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

তিনি রোববার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, “এর মধ্যে কিছু বিষয় থাকবে যা কমিশনের দায়িত্ব, তা করা সম্ভব। কিছু পরামর্শ থাকবে, যা ইসির এখতিয়ারে নয়, আমলে নেওয়া সম্ভব না। এছাড়া কিছু থাকবে অনুরোধমূলক, যা আমরা অনুরোধ করতে পারব।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে আমরা বসব সবার শেষে। আমাদের প্রধান স্টেকহোল্ডার হচ্ছে রাজনৈতিক দল। অন্য সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে তারপর উনাদের সঙ্গে বসব।”

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
এর আগের সংলাপে আমন্ত্রিত অনেকের অনুপস্থিতির বিষয়ে আলমগীর বলেন, “অনেকেই অসুস্থতার কারণে, পূর্ব কর্মসূচির কারণে ও বিদেশ থাকার কারণে আসতে পারেনি। সফলতা বা ব্যর্থতা বলা যাবে না। অনেকেই বলেছেন, পরে ডাকলে আসবে।

“আমরা যে সংলাপ করছি, তা শেষ করেও কারও কারও সাথে হয়ত একাধিকবার সংলাপ করতে হবে। ভোটের আগ পর্যন্ত সংলাপ হবে তা বলা যাবে না। মূলত যখন আমরা প্রস্তুত হয়ে যাব সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তখন সংলাপ শেষ হবে।”

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের ইসি কাজে যোগ দেয়। এরপর ১৩ মার্চ ও ২২ মার্চ বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে দুই দফা সংলাপ করে। রমজানে তৃতীয় ধাপের সংলাপের প্রস্তুতি চলছে।

আলমগীরের মতে, কমিশন যে সংলাপ করছে সে কথাগুলো শুধু কমিশনই শুনছে না, রাজনৈতিক দলগুলোও শুনছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে নানা চিন্তাভাবনা হবে, আলাপ-আলোচনা হবে।

কবে নাগাদ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

আলমগীর বলেন, “আমরা চাই রাজনৈতিক দলের সাথে যখন সংলাপে বসব, তখন যেন একটা পরিষ্কার বিষয় থাকে যে আমরা কী করতে চাচ্ছি।

“আমরা অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে যে চাওয়াগুলো পাব এবং আমাদের সক্ষমতা, তা মিলে আমরা একটা পরিষ্কার পিকচার তথা আইডিয়া তৈরি করব। আর সেই আইডিয়া নিয়েই আমরা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপে বসব।”

বর্তমানে কমিশনে ৩৯টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। দেশে ইসির নিবন্ধন ছাড়া কোনো রাজনৈতিক নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না।

সংলাপে ইসির প্রতি রাজনৈতিক দলসগ জনগণের আস্থা অর্জনে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ এসেছে।

তবে কমিশনের উপর আস্থা-অনাস্থা বিচারের জন্য এক মাস যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন আলমগীর, যিনি এক সময় ইসিতেই সচিবের দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

“এখনও তো আস্থা-অনাস্থা কোনোটাই আসার কথা নয়। আমাদের ভবিষ্যতের কাজকর্ম দেখে, তারপরে আস্থা-অনাস্থার বিষয় আসবে। আস্থা ফেরানোর জন্য সংলাপকে প্রথম ধাপ বলতে পারেন। তারপরে তাদের সাথে আরও আলাপ হবে কর্মকৌশল নির্ধারণে। জাতীয় নির্বাচনের পরে আসবে আস্থার বিষয়টি।”

চলমান সংলাপে অনেক সুন্দর সুন্দর পরামর্শ ও তা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে বলে মন্তব্য করেন এ নির্বাচন কমিশনার।

নতুন ইসি গঠন নিয়ে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো বরাবরই সমালোচনা করে আসছে। সেই সঙ্গে নতুন ইসি নিয়ে দলটির কোনো আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে সংলাপে রাজনৈতিক দলের প্রত্যাখ্যানের ভয় রয়েছে কি না- জানতে চাইলে আলমগীর বলেন, “জাতীয় সংসদ নির্বাচন তো অনেক দূরে। এখনও প্রত্যাখ্যান, গ্রহণের বিষয় আলোচনায় আসে না। সংসদ নির্বাচন হবে ২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের শুরুতে।

“আমরা এ মুহূর্তে প্রত্যাখ্যান বা গ্রহণের বিষয় মনে করি না। সেটা দেখতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে। শিডিউল ঘোষণার আগে আমাদের ইচ্ছে সব নিবন্ধিত দলের সঙ্গে বসার, তবে সেটা হবে (অন্যসব স্টেহকহোল্ডারের পরে) সবার শেষ।”

Pin It