সমবায়ের মাধ্যমে পণ্য বাজারজাতকরণের পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

PM-news20191102195548

উৎপাদিত পণ্য সমবায়ের মাধ্যমে বাজারজাতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৮তম জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে সব কর্মসূচি ও আয়োজিত মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠান থেকে জাতীয় সমবায় পুরস্কার অর্জনকারীদের হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। শুরুতে মেলা পরিদর্শন করেন তিনি।

এ বছরের সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’।

সমবায়ের ভিত্তিতে উৎপাদন ও পণ্য বাজারজাতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমবায়ের ভিত্তিতে বিশেষ করে বাজারজাত করা, অর্থাৎ উৎপাদিত পণ্যটা আমি যথাযথভাবে যদি বাজারজাত করতে না পারি, পণ্য উৎপাদনে মানুষ আগ্রহ হারাবে।

সমবায়ের মাধ্যমে বিপণন ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, একটা পরিবার কিছু উৎপাদন করলে সেটা বাজারে নিয়ে যাওয়া যথেষ্ট কষ্টকর। সমবায়ের মাধ্যমে যদি বিপণন ব্যবস্থাটা আমরা করে দিতে পারি তাহলে প্রতিটি পরিবারই লাভবান হবে।

সমবায়ের মাধ্যমে অনলাইনে কেনাবেচা কার্যক্রম চালুর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমবায় অধিদপ্তরের সদর কার্যালয় থেকে উপজেলা পর্যন্ত সব কার্যালয়কে আইসিটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। সমবায়ের মাধ্যমে অনলাইনে কেনা বেচার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সমবায়কে গুরুত্ব দিয়ে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা মেনে আমরা সমবায়কে গুরুত্ব দিচ্ছি, যেন অধিক মানুষ লাভবান হতে পারে।

সমবায়ের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান যুগে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে একেবারে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সম্পন্ন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলে সমবায়ের মাধ্যমে উন্নয়ন করতে পারবো।

সমবায় আইনকে যুগোপযোগী করা এবং সমবায় ব্যাংককে লাভজনক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিদ্যমান সমবায় আইনকে যুগোপোযোগী করতে হবে। সমবায় ব্যাংক যেটা আছে, সেটা অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়েছিল। এই ব্যাংক আইনটাকে যুগোপযোগী করে এটাকে লাভবানজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

অধিক সুফল পেতে প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, এক্ষেত্রে সমবায়ের কাজে যারা দক্ষ তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সৎভাবে যেন কাজ করেন আমাদের সেভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।

প্রতিটি জমিকে উৎপাদনে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেখা যায় যে কোনো জমি চাষ হয় না, অথবা অনেক সময় দেখা যায় পুকুর হেজে-মজে গেছে, চাষ হয় না, খানাখন্দ পড়ে থাকে। সবটুকুকে কাজে লাগানে- সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রতিটি বাড়ি যেন নিজেরা কিছু উপার্জন করতে পারে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের মাটি উর্বর, জমি উর্বর, আমাদের মানুষগুলো যথেষ্ট কাজের, তাদের একটু কাজে লাগাতে পারলেই সুফল নিয়ে আসা সম্ভব।

সমবায়ের মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে বিভিন্ন গ্রাম উন্নয়ন সমিতি গঠন করে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  আমরা এভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যা দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখছে।

বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না, সে লক্ষ্যে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সারা বাংলাদেশে আমরা তথ্য নিচ্ছি, একটি মানুষও যেন গৃহহারা না থাকে। তাদের জন্য ঘর করে দেওয়া। সে লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা প্রথমে নাম দিয়েছিলাম একটি বাড়ি একটি খামার, পরে আমি নাম দিয়েছিলাম আমার বাড়ি আমার খামার।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। সে লক্ষ্য নিয়ে জাতির পিতা গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। আমরা সেখানে আশ্রায়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি।

Pin It