পূর্বাচলের পাশে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় খাল-বিল, নদী-পুকুর ও জলাশয় ভরাট ও অবৈধ দখলের অভিযোগে ২২টি হাউজিং কোম্পানির কার্যক্রমের উপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে হাই কোর্ট।
এ সংক্রান্ত একটি আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেয়।
এই হাউজিং কোম্পানিগুলো হল- ইউনাইটেড পূর্বাচল ল্যান্ডস লিমিটেড, এজি প্রপার্টিজ লিমিটেড, নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড, বিশ্বাস বিল্ডার্স লিমিটেড, নীলাচল হাউজিং লিমিটেড, বাগান বিলাস, রূপায়ন ল্যান্ডস লিমিটেড, আদর্শ আইডিয়াল লিমিটেড, তেপান্তর হাউজিং, মেট্রোপলিটন ক্রিশ্চিয়ান কো-অপারেটিভ হাউজিং, মঞ্জিল হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, শিকদার রয়েল সিটি, কপোতাক্ষ গ্রীন সিটি, ডিভাইন হোল্ডিং লিমিটেড, শতাব্দী হাউজিং, স্বর্ণ ছায়া রিয়েল এস্টেট, ভিশন ২১ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, ওশান হ্যাভেন লিমিটেড, এস এফ এল চন্দ্রিমা লিমিটেড, গ্রাম্প ইন্টারন্যাশলাল, নর্থসাউথ হাউজিং এবং ফেয়ার ডিল শিপিং লিমিটেড।
স্থিতাবস্থা জারির পাশাপাশি গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কালীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইওএনও) ও কালীগঞ্জ থানার ওসিকে দুই মাসের মধ্যে আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পূরবী সাহা।
পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, “সংবিধানের ১৮ক অনুচ্ছেদ, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৮৫ ও জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ এর বিভিন্ন বিধান অনুযায়ী খাল-বিল, নদী-পুকুর ও জলাশয় ভরাট নিষিদ্ধ। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যায় যে, চূড়ান্ত কোনো অনুমোদন ছাড়াই এসব কোম্পানি বিভিন্নভাবে জলাশয় ভরাট করছে এবং সাইনবোর্ড দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করছে।”
গত বছরের ১২ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ ও গাজীপুরের কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার ১৬টি হাউজিং কোম্পানির জলাশয়, নিচু জমি ভরাট ও দখলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ।
ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৬টি হাউজিং কোম্পানির কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা জারির পাশাপাশি জলাশয়, নিচু জমি ভরাট ও দখলের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করে আদালত।
ওই ১৬ কোম্পানি হচ্ছে- পূর্বাচল সিটি, সিটি ক্লাউড, কানাডা সিটি, জমিদার সিটি, ড্রিমল্যান্ড, হোমল্যান্ড পূর্বাচল সিটি, হোমটাউন পূর্বাচল সিটি, প্রিটি রিয়েল এস্টেট, মাসকট গ্রীন সিটি, পুষ্পিতা এম্পায়ার হাউজিং, নন্দন সিটি, বেস্টওয়ে সিটি, মালুম সিটি, মেরিন সিটি ও সোপান সিটি।
গত বৃহস্পতিবার ওই রিটেই একটি সম্পূরক আবেদন করে রিটকারী পক্ষ। এই আবেদনের শুনানি নিয়েই আদালত রোববার ২২ কোম্পানির কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা দিয়েছে।
সংশোধনী: প্রতিবেদনে প্রথমে ২৪ কোম্পানির কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা জারির কথা বলা হয়েছিল। আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ওই তথ্য দিয়েছিলেন। পরে যাচাই করে দেখা যায় কোম্পানির সংখ্যা ২২টি। মনজিল মোরসেদও তার ভুল স্বীকার করে বলেছেন, সম্পূরক আবেদনে কোম্পানির তালিকার ক্রমে ত্রুটির কারণে তিনি ভুল বুঝেছিলেন।