ঘরোয়া একটি পরিসর থেকে ফেইসবুকের বাণিজ্যিক ভিত রচনায় যিনি ছিলেন মার্ক জাকারবার্গের সঙ্গী, সেই ক্রিস হিউজ এখন চাইছেন কোম্পানিটির অবলুপ্তি।
নিউ নিয়র্ক টাইমসে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে হিউস লিখেছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার এখন উচিৎ ফেইসবুক ভেঙে দেওয়া।
তার মতে, জাকারবার্গ বিশ্বে এখন একচ্ছত্র ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছেন এবং এমন ক্ষমতা কোনো বেসরকারি কোম্পানি তো দূরের কথা কোনো সরকারের কারও নেই।
২০০৪ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় হিউজসহ কয়েকজন বন্ধুর যৌথ উদ্যোগে জাকারবার্গ যে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, তা-ই বিশাল কলেবর নিয়ে আজকের ফেইসবুকে পরিণত হয়েছে।
২০০৬ সালে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরুর পর ইন্টারনেট জগতে কোটি কোটি মানুষ এখন ফেইসবুকে যুক্ত। এই কোম্পানির সম্পদমূল্য এখন শত বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই।
কোম্পানির রমরমা অবস্থার সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী জাকারবার্গ।
জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে গত কয়েক বছরে বিতর্কও সঙ্গী হয়েছে ফেইসবুকের; গ্রাহকের তথ্য চুরি, ভুয়া তথ্য প্রচার ও নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সামলাতে হচ্ছে একে।
বিতর্ক এড়াতে জাকারবার্গ ফেইসবুকে কিছু নিয়মকানুন আনতে চাইছেন; তার মধ্যেই তার পুরনো বন্ধু হিউজের কঠোর লেখাটি প্রকাশ হল।
হিউজ লিখেছেন, “মার্ক ভালো, সদয় মানুষ। কিন্তু আমার ক্ষোভ সেখানে যে লাভের লোভে সে নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিসর্জন দিয়েছে, ক্লিকের লোভে বিসর্জন দিয়েছে সহনশীলতাকে।”
এক দশক ধরে ফেইসবুকের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই হিউজের; তার এখন হতাশা, শুরুর পর্যায়ে কেন চিন্তা করেননি যে ফেইসবুকের নিউজ ফিড বিশ্বের সংস্কৃতিকে এত পরিবর্তন ঘটাতে পারে, নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে পারে, জাতীয়তাবাদী নেতাদের আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে।
“আমি আরও হতাশ যে মার্ক তার আশপাশে এমন লোকদের রেখেছে, যারা তার বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালীই করছে, কোনো চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে না।”
প্রযুক্তি খাতে ফেইসবুকের মতো একচেটিয়া ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে নতুন তদারকি সং স্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান হিউজ।
“জাকারবার্গ একটি দানব তৈরি করেছে, যা অন্য উদ্যোক্তাদের পথে বসাচ্ছে, গ্রাহকের পছন্দও নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের সরকারের এটা নিশ্চিত করা উচিৎ যে অদৃশ্য হাতের জাদুতে আমরা যাতে হেরে না যাই।”
হিউজের কঠোর এই লেখার প্রতিক্রিয়ায় ফেইসবুকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ সিএনএনকে বলেছেন, “এটা আমরা স্বীকার করছি যে সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। কিন্তু সফল একটি কোম্পানি জোর করে বন্ধের দাবি তুলে দায়িত্বশীলতা আনা যায় না।”