সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর এ উপনির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন ঘোষণা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন।
তবে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতারা সমকালকে জানিয়েছেন, আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ বৈঠকে উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা হবে। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছেন ১৬ জন। তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, রংপুর মহানগরের সভাপতি সাফিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, সহসভাপতি দিলশাদ ইসলাম, হাবিবুল হক সরকার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিলন, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আবদুল মজিদ, সদস্য মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, দেলোয়ার হোসেন, রংপুর জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোমতাজ উদ্দীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক এটিএম তৌহিদুর রহমান টুটুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রোজী রহমান এবং রংপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি গোলাম রব্বানী বিপ্লব। তাদের মধ্য থেকে একজনের নাম আজকের বৈঠকে চূড়ান্ত হলেও পরে তাকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হতে পারে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কেউ সংগঠনকে গুছিয়ে আনার জন্য রংপুর-৩ আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের পক্ষে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা চাইছেন না। তিনি গত মঙ্গলবার একনেকের বৈঠক শেষে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে .সমর্থন করার বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ব্যানারে নির্বাচন করলেও বর্তমানে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় রয়েছে জাতীয় পার্টি। এ কারণে জাতীয় পার্টিকে সংসদে আরও শক্তিশালী অবস্থানে দেখতে চাইছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতারা। জাতীয় পার্টির নেতারাও উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
এদিকে, বিএনপি এই উপনির্বাচনে অংশ নেবে কি-না তা চূড়ান্ত করবে আজ শনিবার। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তবে নির্বাচন-সংক্রান্ত প্রস্তুতিও রয়েছে বিএনপির। ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা শুরু হয়েছে। বিএনপি উপনির্বাচনে আসবে বলেই মনে করছে আওয়ামী লীগ। এ অস্থায় মহাজোটের ব্যানারে নির্বাচন হলে এবং আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির পৃথক প্রার্থী থাকলে নির্বাচনের মাঠে বিএনপি বাড়তি সুবিধা পেতে পারে বলেও ধারণা ক্ষমতাসীন দলটির। এ কারণেও শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির প্রার্থীকেই আওয়ামী লীগ থেকে সমর্থন দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলীয় নীতিনির্ধারকরা।
রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গত ১৪ জুলাই মারা যাওয়ায় আসনটি শূন্য হয়েছে। এ আসনের উপনির্বাচন আগামী ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে।