প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে মঙ্গরবার রাজধানীসহ সারাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা শেষ হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যথাযথ ধর্মীয় মর্যদায় দেশব্যাপী ৩১ হাজারেরও বেশি পূজামণ্ডপে পূজা-অর্চনা, শ্রদ্ধা নিবেদন এবং প্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে দেবী দূর্গা ভক্তরা পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসব উদযাপন করেন।
সার্বজনীন এই উৎসবের প্রত্যেক দিনই সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়র সকল বয়সের নারী-পুরুষ মণ্ডপে-মণ্ডপে গিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন। পাশাপাশি দূর্গতি নাশিনী দেবীদূর্গার কৃপা লাভের আশায় তারা আরাধনা করেন।
প্রতিবারের ন্যায় এ বছরও দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। প্রতিটি পূজামণ্ডপে বিপুলসংখ্যক আনসার, ব্যাটালিয়ান পুলিশ ও র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। বসানো হয় মেটাল ডিটেক্টও ও ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরা (সিসিটিভি)।
পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ দিন মঙ্গলবার ছিল বিজয়া দশমী। উমার (দেবীদূর্গা) ফিরে যাওয়ার দিন। ‘অকাল বোধনে’কৈলাস থেকে শরতের পঞ্চম তিথিতে ঘোড়ায় চড়ে উমা আসেন পিতৃগৃহে । পাঁচ দিন পর দশমী তিথিতে আবার ফিরে যান কৈলাসে।
এদিকে মঙ্গলবার দিন-শেষে দেবী দুর্গার বিদায়বেলায় আনন্দ-বেদনার মিশ্রণ অনুভূতিতে ‘মা দূর্গার ভক্তদের হৃদয় সিক্ত করে তোলে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে দশমীবিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন দেয়া হয়। দশমীতে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে সিঁন্দুর খেলায় মেতে উঠেন ভক্তরা।
বিকাল ৪টার দিকে প্রতিমা বিসর্জনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গন থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে বিজয়া শোভাযাত্রা বের হয়। এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে ভক্তরা জমা হতে থাকেন পুরান ঢাকার পলাশীর মোড়ে। সেখান থেকে সম্মিলিতভাবে মন্ত্রচ্চারণ ও পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে শুরু হয় বিজয়ার শোভাযাত্রা।
ঢাক-কাশরীর বাদ্যি-বাজনার তালে-তালে শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে গোধুলিলগ্নে সদরঘাটের ওয়াইজঘাটের বুড়িগঙ্গা নদী তীরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে রাজধানীর বিভিন্ন মণ্ডপের প্রতিমা বিসজৃন দেওয়া হয়। এছাড়াও রাজধানীর আশেপাশের নদ-নদীগুলোতেও যেমন বাল, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা নদীতেও প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়।