জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ চারজন পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগকারী শিক্ষকরা হলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল রানা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন, সদস্য অধ্যাপক মাহবুব কবির ও সদস্য অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারা পদত্যাগ করেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অধ্যাপক সোহেল রানা বলেন, আজকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শিক্ষক সমিতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর স্বার্থে কিছুই করতে পারেনি। আমরা মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় জরুরী মিটিংয়ে বসেছিলাম। সেখানে বিচার চাওয়া তো দূরের কথা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদও করতে পারেনি। উল্টো শিক্ষক নেতারা আন্দোলনকারীদেরকে তিরস্কার করেছে।
তিনি বলেন, তাই আমরা মনে করছি যে শিক্ষক সমিতি এই কমিটি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বার্থ আদায়ে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছি। তাই আমরা দায়বদ্ধতা ও বিবেকের তাড়না থেকেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
উল্লেখ্য, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে বেশ কিছুদিন ধরে উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি কাটার উন্নয়ন প্রকল্প থেকে শাখা ছাত্রলীগের নেতাদের উপাচার্যের প্রায় ২ কোটি টাকা ‘ঈদ সালামির’ দেওয়ার অডিও ফাঁস দেয়। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর আন্দোলন নামে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় শাখা ছাত্রলীগ। এরপর দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো হামলা হয়নি। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলনকারীদের আমার বাসভবনের সামনে থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
হামলায় আটজন শিক্ষক, চারজন সাংবাদিক ও নারী শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় হামলাকারীরা সাংবাদিকদেরও লাঞ্ছিত করেন। আহত শিক্ষকরা হলেন নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাইদ ফেরদৌস, মীর্জা তাসলিমা সুলতানা, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানাসহ আরো কয়েকজন।