বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কমিটি ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শোনা যাচ্ছিল, আগের কমিটিতে থাকা তিনজন মন্ত্রী, চারজন প্রতিমন্ত্রী ও দু’জন উপমন্ত্রী এবার বাদ পড়তে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার রাতে ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে শেষ পর্যন্ত তাদের বাদ রাখাই হয়েছে। বাদপড়া মন্ত্রিসভার সদস্যরা হচ্ছেন- শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। আগের কমিটিতে বিভিন্ন পদে ছিলেন তারা।
ওবায়দুল কাদের অবশ্য ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সব পদে নেতাদের নাম এখনও ঘোষণা করেননি। এখনও সাতটি পদে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এসব পদে রয়েছে একটি সাংগঠনিক সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এবং তিনটি কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্যপদ।
সাংগঠনিক সম্পাদক: অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, সিলেটের শফিউল আলম।
উপপ্রচার সম্পাদক: আমিনুল ইসলাম।
উপদপ্তর সম্পাদক: সায়েম খান।
অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক: বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান।
তথ্য গবেষণা সম্পাদক: ড. সেলিম মাহমুদ।
শ্রম ও জনশক্তি: হাবিবুর রহমান সিরাজ।
আগের কমিটিতে থাকা সম্পাদকীয় পদগুলোর মধ্যে শ্রম ও জনশক্তি সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ ও উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন স্বপদে বহাল রয়েছেন। এ ছাড়া সবক’টিতেই নতুন মুখ এসেছে। তারা হচ্ছেন- অর্থ ও পরিকল্পনা ওয়াসিকা আয়শা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহবুব এবং উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান। ঘোষিত ২৫টি কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্যের পদে অবশ্য বেশিরভাগই পুরোনো মুখ। দলের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্যপদে আনা হয়েছে।
এর আগে গত শনিবার আওয়ামী লীগের দু’দিনব্যাপী ২১তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৪২ জন নির্বাচিত নেতার নাম ঘোষণা করেছিলেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদের ৪৪ জন এবং দলের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের নামও ঘোষণা করেন তিনি। ওই সম্মেলনে কাউন্সিলরদের সর্বসম্মত সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা নবমবারের মতো দলের সভাপতি এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
এরপর গত মঙ্গলবার দলের নব-নির্বাচিত সভাপতিমণ্ডলীর প্রথম বৈঠকে বৃহস্পতিবার দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি চূড়ান্ত করে দেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। এরপরই ধানমন্ডির কার্যালয়ে ফিরে রাত সাড়ে ৯টায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন ওবায়দুল কাদের।
দলের নেতারা জানিয়েছেন, আগে থেকেই পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া করে রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে খসড়া তালিকায় থাকা বেশিরভাগ নেতার নামও জানিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার যশোরে রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ঢাকা ফেরার পর সন্ধ্যায় গণভবনে ডেকে পাঠান ওবায়দুল কাদেরকে। সেখানে খসড়া তালিকায় কিছু সংযোজন-বিয়োজনের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি চূড়ান্ত করেন শেখ হাসিনা।
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ:
সভাপতি: শেখ হাসিনা;
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য: সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্লাহ, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, শাজাহান খান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান;
সাধারণ সম্পাদক: ওবায়দুল কাদের;
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক: মাহবুবউল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম;
অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক: ওয়াসিকা আয়শা; আন্তর্জাতিক সম্পাদক: ড. শাম্মী আহমেদ; আইন সম্পাদক: অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হীরু; কৃষি ও সমবায় সম্পাদক: ফরিদুন্নাহার লাইলী; তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক: ড. সেলিম মাহবুব; ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক: সুজিত রায় নন্দী; দপ্তর সম্পাদক: ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া; প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক: ড. আবদুস সোবহান গোলাপ; বন ও পরিবেশ সম্পাদক: দেলোয়ার হোসেন; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক: প্রকৌশলী আবদুস সবুর; মহিলা সম্পাদক: মেহের আফরোজ চুমকি; মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক: অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস; যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক: হারুনুর রশীদ; শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক: শামসুন নাহার চাঁপা; সাংস্কৃতিক সম্পাদক: অসীম কুমার উকিল; স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক: ডা. রোকেয়া সুলতানা; সাংগঠনিক সম্পাদক: আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ও শফিউল আলম চৌধূরী নাদের; উপ-প্রচার সম্পাদক: আমিনুল ইসলাম আমিন; উপ দপ্তর সম্পাদক: সায়েম খান এবং
কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য: আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তোফা জালাল মহিউদ্দিন, খ ম জাহাঙ্গীর, নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, বদরুদ্দিন আহমেদ কামরান, দিপঙ্কার তালুকদার, অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, আক্তার জাহান- রাজশাহী, ডা মুশফিক- হবিগঞ্জ, অ্যাড. রিয়াজুল কবির কাওসার, মেরিনা জামান কবিতা, পারভিন জামান কল্পনা, হোসনে আর লুৎফক ডালিয়া- রংপুর, অ্যাডভোকেট সফুরা খাতুন, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান, শাহাবুদ্দিন ফরাজি, ইকবাল হোসেন অপু, গোলাম রব্বানী চিনু, মারুফা আক্তার পপি, উপাধ্যক্ষ রেমেং আরেং ও গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা।