পুঁজিবাজার সংকট উত্তরণে ছয় নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর

image-123193-1579203943

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুঁজিবাজারের সংকট উত্তরণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থাসহ ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছেন। আবারো বড় ধসের কবলে পড়া বাংলাদেশের পুঁজিবাজার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)’র চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনসহ সংশ্লিষ্টদের গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি উল্লিখিত নির্দেশনা দেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বেলা ১২টায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী, বিএসইসির চেয়ারম্যান এবং সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুঁজিবাজারকে গতিশীল ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কতিপয় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা হয়। স্বল্পমেয়াদি বেশ কিছু সিদ্ধান্ত অচিরেই বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুঁজিবাজারের জন্য যা যা করার দরকার তা করা হবে।’

এক দশকের মাথায় ফের আরও একটি বড় ধসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পুঁজিবাজার, গত মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এেচঞ্জের প্রধান সূচক আবার নেমে এসেছিল ভিত্তি পয়েন্টেরও নিচে। ওই দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স ৮৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৩৬ পয়েন্ট হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে যখন ডিএসইএক্স চালু হয়েছিল, তখন এ সূচকের ভিত্তি পয়েন্ট ছিল ৪ হাজার ৫৫ পয়েন্ট। নতুন বছরের প্রথম আট দিনেই ডিএসইএক্স ৯ দশমিক ৪ শতাংশ কমে গেছে।

দরপতনের ধাক্কায় এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে এক লাখ কোটি টাকা। শেয়ারের দাম ও আয়ের অনুপাত যেখানে নেমেছে, ততটা খারাপ দশা আর কখনও ছিল না।

বাজারের এই করুণ দশায় ফের রাস্তায় নেমেছেন ছোট বিনিয়োগকারীরা। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে তারা মতিঝিলে ডিএসই ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন। বুধবার জাতীয় সংসদে বক্তব্যে ধসের কবল থেকে পুঁজিবাজারকে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চান জাতীয় পার্টির (এ) সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। তার পরদিনই সংশ্লিষ্টদের নিজের কার্যালয়ে ডেকে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলো হল, পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা, মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য কতিপয় সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করা, আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও দেশীয় বাজারে আস্থা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা, বাজারে মানসম্পন্ন আইপিও বৃদ্ধির লক্ষ্যে বহুজাতিক ও সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা।

এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া পর্যায়ক্রমে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে মর্মে সভায় আলোচনা হয়।

Pin It