প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার সকাল ১০টায় গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন। এ সময় করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের অর্থনৈতিক প্রভাব থেকে দেশকে উত্তরণের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, সংবাদ সম্মেলনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে সার্বিক পরিস্থিতি এবং তা মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোও তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশবাসীকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও দেবেন তিনি।
সরকারি নীতিনির্ধারক সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় বড় ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে করোনার প্রভাবে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির তথ্যও তুলে ধরবেন।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন স্বাভাবিক সময়ের মতো হচ্ছে না। শুধু বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও মাছরাঙা টেলিভিশন সংবাদ সম্মেলনটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সংকট মোকাবিলায় দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এসব পরিকল্পনার কথা তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী। জানা গেছে, করোনার প্রভাবে রপ্তানিমুখী শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই), কৃষি, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পসহ ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য খাতে সহায়তা দেবে সরকার। বিশেষ করে এসএমই ও কৃষি খাতের জন্য একটি তহবিল গঠন করা হবে। ওই তহবিল থেকে কম সুদে ও সহজ শর্তে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে।
এর আগে গত ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রপ্তানিমুখী সব শিল্পের সুরক্ষায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অবশ্য ওই টাকা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য দেওয়া হবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করে তা কার্যকর করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে খাতভিত্তিক ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব নিরূপণ করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, উৎপাদনমুখী, সেবাসহ প্রায় সব শিল্প খাতেই করোনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। করোনা পরিস্থিতি আরও দীর্ঘস্থায়ী হলে সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতি গভীর সংকটে পড়বে। এতে লাখ লাখ লোক বেকার হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে বাঁচাতে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে সরকার।
জানা যায়, সম্প্রতি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই পরিকল্পনার খসড়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং তা কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদারসহ সরকারের সংশ্নিষ্ট নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একটি সূত্র বলেছে, আজ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিতব্য প্রণোদনা প্যাকেজে বিশাল অঙ্কের তহবিল গঠনের ঘোষণা আসতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, অনুদান নয়; সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ঋণ-সহায়তা দেওয়া। তবে ঋণের সুদহার হবে সহনশীল এবং শর্ত হবে নমনীয়। তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত প্রণোদনা প্যাকেজের লক্ষ্য আপৎকালে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকে সহায়তা করা। এ জন্য কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।