বিশ্বব্যাপী চলছে কোভিড-১৯ এর আঘাত। এর মধ্যেই হঠাৎ করে খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতির হার আকাশচুম্বী। ফলে যাদের আয় কমে গেছে, সংসার চালাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। চলতি বছরের মাসওয়ারিতে জুন মাসে সাধারণ ও খাদ্যখাতে বেড়েছে মূল্যস্ফীতির হার।
অন্যদিকে অনেকে চাকরি হারিয়ে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি পাড়ি জমিয়েছেন। ফলে কমেছে বাড়িভাড়া। এ কারণে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে।
মে মাসে সাধারণ খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ, জুন মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ০২ শতাংশ।
সোমবার (৬ জুলাই) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া জুন মাসে ভোক্তা মূল্য সূচকের (সিপিআই) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে এ চিত্র দেখা গেছে।
বিবিএসের দাবি, মে মাসের মাসের তুলনায় জুন মাসে মাছ, শাক-সবজি বিশেষ করে আলু, বেগুন, শিম, কুমড়া, গাঁজর, শসা, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক ও মূলার দাম বেড়েছে। ফল জাতীয় পণ্যের মূল্যও বাড়তি। মসলা জাতীয় পণ্য যেমন পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও মাসওয়ারি বেড়েছে। ফলে জুন মাসে খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ, অথচ মে মাসে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে জানানো হয়, ২০২০ সালের জুনে পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার কমে হয়েছে ৬ দশমিক ৩০২ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
বছরওয়ারি পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে মে মাসে ডাল, চিনি, মুড়ি, মাছ-মাংস, ব্রয়লার মুরগি, ফল, তামাক, দুধজাতীয় পণ্য এবং অন্য খাদ্যসামগ্রীর দাম বাড়তি। এছাড়া মাসওয়ারি ডিম, শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় পণ্যের দামও ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।
এদিকে জুন মাসে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৫ দশমিক ২২ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ এবং বিবিধ সেবাখাতে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে।
বিবিএস জানায়, মূল্য ও মজুরি বিষয়ক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। সারা দেশের ৬৪টি জেলায় ১৪০টি হাট-বাজার থেকে নির্ধারিত মাসের ১২ থেকে ১৮ তারিখের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব তথ্য সংগ্রহ করে প্রকাশ করেছে বিবিএস।
আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪ শতাংশে ধরে রাখার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল। অথচ বাজেট পেশ করার এক মাসের মধ্যেই মূল্যস্ফীতির হারের লাগাম টেনে ধরা গেলো না।