সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ হিন্দু নারীকে বিয়ে ও তাকে পুরো বাড়ি উইল করার বিষয়ে আইনগত মতামত দিতে চারজন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট, ১৮৭২ অনুসারে কোন মুসলিম হিন্দু নারীকে বিবাহ করতে পারে কিনা এবং বিবাহের পর ওই নারীকে পুরো সম্পত্তি উইল করে দিতে পারে কিনা এ বিষয়ে আইনগত ব্যাখ্যা জানা প্রয়োজন। এ কারণে সিনিয়র আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ, কামরুল হক সিদ্দিকী, কামালুল আলম ও নুরুল আমিনকে অ্যামিকাসকিউরি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো। আগামী ১২ জানুয়ারি এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকার ছয়টি ব্যাংকে মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের নামে কোন অ্যাকাউন্ট থাকলে তার তথ্য আদালতে দাখিল করতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ম্যানেজারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে উনার সিটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত ফাইল আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ের পক্ষে মনজিল মোরসেদ এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের পক্ষে শুনানি করেন মাসুদ আর সোবহান। শুনানিতে মনজিল মোরসেদ বলেন, জগলুল ওয়াহিদের স্ত্রী দাবি করে আনজু কাপুর যে ডকুমেন্টস দাখিল করেছেন তার কোন আইনগত ভিত্তি নাই। কারণ আইনে এ ধরনের বিয়ের কোন সুযোগ নাই। আর আইনানুযায়ী এক তৃতীয়াংশ উইলের বিধান রয়েছে। সেক্ষেত্রে পুরো সম্পত্তি উইল করে দেওয়ার সুযোগ নাই। মাসুদ আর সোবহান বলেন, জগলুল ওয়াহিদ মৃত্যুর আগে বাড়িটি উইল করে দিয়েছেন। এখানে মেয়েদের কোন অধিকার নাই।
প্রসঙ্গত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়েকে উদ্বৃত করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮৪ সালে তার মাকে নিয়ে তাদের বাবা গুলশানে দশ কাঠা জমির উপর নির্মিত এই বাড়িতেই বসবাস করছিলেন। তাদের জন্ম এই বাড়িতে। ২০০৫ সালে তাদের মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়। পরে আনজু কাপুর নামে এক ভারতীয়কে বিয়ে করেন। আনজু কাপুর একাই ঐ বাড়ির ভোগদখল করছেন। বাবার মৃত্যুর পর তারা ওই বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলেও তা করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রকাশিত এই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ২৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মোস্তফা জগলুলের দুই কন্যা মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশশারা মোস্তফাকে গুলশানের ঐ পৈত্রিক বাড়িতে তুলে দেয় পুলিশ। একইসঙ্গে তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ।