বাংলাদেশের এলপিজি খাতে ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে তুরস্ক। রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা তুরান এ আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, তুরস্কের বিভিন্ন বাণিজ্য সংস্থা এবং ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগে নিজস্ব আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। তুরস্কের একটি সংস্থা বাংলাদেশের এলপিজি খাতে একশ’ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।
এছাড়াও রোহিঙ্গা সমস্যায় বাংলাদেশের পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছে তুরস্ক।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস বৈঠকের বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশে নবনিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা তুরান বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোই হবে রেহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে তুরস্ক সবসময়ই বাংলাদেশের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর পরই তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোগানের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরগুলো পরিদর্শন করায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সফর বিনিময়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সন্তোষ ব্যক্ত করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকালে এই সম্পর্ক আগামীতে আরো জোরদার হবে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত সেদেশের ব্যবসায়ীদের আগ্রহের কথা জানালে প্রধানমন্ত্রী তাতেও সন্তোষ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বৈরুতে বোমা বিস্ফোরণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ মেরামতে সহযোগিতার জন্যও তুরস্ক সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূততে সম্ভাব্য সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করে তার সুস্বাস্থ্য এবং সাফল্য কামনা করেন। তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্টকেও শুভেচ্ছা জানান।
এই প্রথম রাষ্ট্রদূত হয়ে মুস্তাফা তুরান বাংলাদেশে দায়িত্ব পেয়েছেন এবং দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের তার দেশের আকাঙ্ক্ষার কথা ব্যক্ত করেছেন।
বাণিজ্য সম্প্রসারণে দুই দেশের প্রতিষ্ঠান বিডা এবং তুরস্কের বেইক এর মধ্যে গত ২১ জানুয়ারি ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি ওয়েবিনার বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
তুরস্কের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের নামে রাজধানী ঢাকার একটি সড়কের নামকরণ করায় রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
নরওয়েকে ইকোনোমিক জোনে বড় বিনিয়োগ নিয়ে আসার আহ্বান
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে প্রবেশ করার সুযোগ রয়েছে।
রোববার (৭ জানুয়ারি) সকালে গণভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন সৌজন্য সাক্ষাতে এলে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
পরে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ও আঞ্চলিক বাজার সুবিধাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব পাটসহ বিভিন্ন সেক্টরে বড় ধরনের বিনিয়োগ নিয়ে আসতে নরওয়ের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে নরওয়ের সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশব্যাপী কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম শুরুর কথা উল্লেখ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত এসপেন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর প্রথম দিকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী দেশগুলোর মধ্যে নরওয়ে অন্যতম।
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে নরওয়ের সহযোগিতামূলক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, নরওয়ে বাংলাদেশের অন্যতম বড় উন্নয়ন অংশীদার।