ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি নিউমার্কেট থানার বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গোয়েন্দা রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।
তিনি বলেন, বিকেলে নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা মামলায় মকবুল হোসেন নামে একজনকে ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে এসে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, নিউমার্কেট এলাকায় ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুড নামে যে দুই দোকানের কর্মচারীদের দ্বন্দ্ব থেকে এ সংঘর্ষ ছড়ায় ওই দোকান দুটি মকবুল হোসেনের নামে সিটি করপোরেশন থেকে বরাদ্দ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু দোকান দুটির মধ্যে একটি রফিকুল ইসলাম ও অপরটি শহিদুল ইসলাম নামে দুই ব্যক্তি ভাড়া নিয়ে চালাতেন।
এদিকে নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি বিস্ফোরক আইনে ও অপরটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুই মামলাতে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়। তবে একটি মামলায় বিএনপি নেতাসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলায় নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলায় বাকি আসামিরা হলেন- আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু, হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহিদুল ইসলাম শহিদ, জাপানি ফারুক, মিজান বেপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল।
এছাড়া সংঘর্ষে নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাত আসামি উল্লেখ করেন। এ তিন মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে প্রায় এক হাজার ৪০০ জনকে। তবে তিনটি মামলার মধ্যে শুধু একটিতেই এক বিএনপি নেতাসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলাটির বাদী পুলিশ।
গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষ চলার পর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পরদিন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে উভয় পক্ষের মধ্যে।
এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের একজন ডেলিভারিম্যান, অন্যজন দোকান কর্মচারী।