ইতিহাস গড়ল নিউজিল্যান্ড। প্রথম দল হিসেবে ভারতের মাটিতে ভারতকেই তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ দিল তারা।
বেঙ্গালুরু, পুনের পর মুম্বাইয়েও জয়ের কাব্য লিখল টম ল্যাথামের দল। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে ভারতকে ২৫ রানে হারিয়েছে সফরকারীরা।
তিন ম্যাচ সিরিজে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করার অভিজ্ঞতা অবশ্য আগে কখনো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। না ঘরে, না বাইরে। এমনকি প্রথমবারের মতো ঘরের বাইরে টানা তিন টেস্টে জয়ের দেখা পেল কিউইরা। অথচ ভারতে তারা পা রেখেছিল শ্রীলঙ্কার কাছে ধবলধোলাই হয়ে। তার ওপর নিজেদের মাটিতে এক যুগ ধরে কোনো সিরিজ হারের রেকর্ড নেই ভারতের। কিন্তু দিনশেষে দলের সবচেয়ে বড় তারকা কেইন উইলিয়ামসনকে ছাড়াই অবিশ্বাস্য কাব্য লিখে ফিলল নিউজিল্যান্ড।
মুম্বাইয়ে তৃতীয় দিনের শুরুতে এগিয়ে ছিল ভারতই। আগের দিন ৯ উইকেটে ১৭১ রানে কিউইদের বেঁধে রাখে। আজ শেষ ব্যাটার হিসেবে এজাজ প্যাটেলকে তুলে নিয়ে ফাইফার পূর্ণ করেন রবীন্দ্র জাদেজা। তাতে স্বাগতিকরা পায় ১৪৭ রানের লক্ষ্য। কিন্তু এমন ঘূর্ণি পিচে যে সেই লক্ষ্য পাড়ি দেওয়া কঠিন তা বেশ ভালোমতোই জানত ভারত। কিন্তু সতর্ক থেকেও এড়াতে পারেনি ব্যাটিং ধস। এজাজ প্যাটেল, গ্লেন ফিলিপস ও ম্যাট হেনরির সামনে ২৯ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।
সেখান থেকে নিউজিল্যান্ডের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ান ঋষভ পন্ত। পাল্টা আক্রমণ করে ভারতের আশাও বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে যান তিনি। কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথামের রিভিউ না নেওয়ার কারণে এলবিডব্লিউ হয়েও জীবন পান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। কিন্তু শেষমেষ তাকে বিদায় নিতে হলো ‘বিতর্কিত’ এক সিদ্ধান্তে। এজাজের বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এলেও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বেশ হতাশই হন পন্ত। হয়তো তার দাবি ছিল, ব্যাটে বল লাগার কারণে নয়, বরং ব্যাট-প্যাডের সংস্পর্শের কারণেই আল্ট্রা এজে স্পাইক দেখা গেছে।
৫৭ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ রানে পন্ত সাজঘরে ফেরার পর নিউজিল্যান্ডের জয় পেতে অপেক্ষা ছিল কেবল সময়ের। এজাজ ও ফিলিপস মিলে কাজটা বেশ দ্রুততার সঙ্গেই করেন। পন্ত, ওয়াশিংটন সুন্দর ও রোহিত শর্মা বাদে ভারতের কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া এজাজ এবার ৫৭ রানে শিকার করেন ৬ উইকেট। প্রায় তিন বছর আগে এই মাঠেই এক ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এবার নিউজিল্যান্ডের হয়ে আরও ইতিহাসের জন্ম দিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। তাতে ফিলিপসেরও আছে অনন্য অবদান। ৪২ রান খরচে তার অর্জন ৩ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৩৫/১০ (মিচেল ৮২, ইয়াং ৭১; জাদেজা ৫/৬৫, সুন্দর ৪/৮১)।
ভারত ১ম ইনিংস: ২৬৩/১০ (গিল ৯০, পন্ত ৬০; এজাজ ৫/১০৩)।
নিউজিল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১৭৪/১০ (ইয়াং ৫১, ফিলিপস ২৬; জাদেজা ৫/৫৫, অশ্বিন ৩/৬৩)।
ভারত ২য় ইনিংস : ১২১/১০ (পন্ত ৬৪, সুন্দর ১২; এজাজ ৬/৫৭; ফিলিপস ৩/৪২)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ২৫ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: এজাজ প্যাটেল (১১উইকেট)।
সিরিজ: নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
সিরিজসেরা: উইল ইয়াং (২৪৪ রান)।