লকডাউনের মধ্যেই সংঘর্ষ, কাটা পা নিয়ে উল্লাস

nabinagar-thana-samakal-5e935c68f1145

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকন্দি গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান গ্রুপ ও কাউছার মোল্লা গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে রোববার কাউছার মোল্লা গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। এতে প্রায় অর্ধশত লোক আহত হয়।

আবু মেম্বারের বাড়িসহ প্রায় ৩০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে হামলাকারীরা। এ সময় বাড়িঘরে লুটপাট চালানো হয়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা জিল্লুর চেয়ারম্যান গ্রুপের মোবারক হোসেনের (৪৫) পা কেটে নিয়ে যায়। কাটা পা নিয়ে তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মিছিল করে।  এ মিছিলের দৃশ্য পরে সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

আহত মোবারককে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালসহ অন্য আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। সংঘর্ষে লিপ্ত ৩০ জনকে পুলিশ আটক করেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল।

মোবারক জানান, কাউছার মোল্লা গ্রুপের মাইনুদ্দিন মিয়ার ছেলে রুবেল, মালি মিয়ার  ছেলে জাবেদ, আওলাদ মিয়ার ছেলে রনি, ফজলু মিয়ার ছেলে মহসিন আমার ওপর হামলা করে আমার পা কেটে নিয়ে যায়।

ওই গ্রামে প্রায় তিন যুগের বেশি সময় ধরে দুই প্রভাবশালী আবু মেম্বার ও মোসলেম মেম্বারের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বর্তমান এ দুই গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও কাউছার মোল্লা। এলাকার যে কোনো ইস্যুতে ওই দুই গ্রুপ দুই পক্ষে অবস্থান নিয়ে নেতৃত্ব দেয়। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। বিভিন্ন সময় নানা ইস্যুতে সংঘটিত সংঘর্ষে পাঁচটি খুন ও ২৫টি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গৌরনগর, হাজীর হাটি, সাতঘর হাটি ও থানাকান্দি- এ চারটি গ্রামে ৩৫ বছর ধরে এ খুন-খারাবি চলে আসছে। ওই দুই গ্রুপই এ চারটি গ্রামকে নিয়ন্ত্রণ করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মকবুল হোসেন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় বিকেল পর্যন্ত ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে। পরবর্তী যে কোনো ঘটনা এড়াতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

Pin It