হোসেনি দালান চত্ত্বরেই সীমাবদ্ধ সব অনুষ্ঠান

29-08-20-Hosni-Dalan-1-samakal-5f4b3b7ca9f4b

আজ রোববার, ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। ৬১ হিজরির এ দিনে ফোরাত নদীর তীরবর্তী কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.)। সারাবিশ্বে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে দিনটি শোকের। তাদের শাহাদাত স্মরণে প্রতি বছর আশুরায় তাজিয়া মিছিল হলেও করোনার কারণে এবার তা হোসেনি দালান চত্ত্বরেই সীমাবদ্ধ ছিল। পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে সীমিত পরিসরে মার্সিয়া ও মাতমের মাধ্যমে দিনটি অতিবাহিত করছেন শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ।

পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের হোসেনি দালানের ইমাম-বাড়া কর্তৃপক্ষ জানায়, সীমিত পরিসরে কিছু আয়োজন হচ্ছে দালানের ভেতরে। সীমিত আকারে রোববার সকাল ১০টা থেকে দালান চত্তরে অনুষ্ঠিত হয় তাজিয়া মিছিল। মূল সড়কে বের হয়নি মিছিল।

আশুরা উপলক্ষে রোববার সকাল থেকেই ভক্তদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে হোসেনি দালান চত্বর।

ইতোমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকেও তাজিয়া মিছিল ও সমাবেশ না করার জন্য বলা হয়েছে। হোসেনি দালান যে সড়কে সে সড়কে প্রবেশের মুখে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একেকজনকে পরীক্ষা করে আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করাচ্ছিলেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিহারী ক্যাম্প ও শিয়া মসজিদ ঘিরে রেখেছে পুলিশ। প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে দুপুরের পর সীমিত আকারে তাজিয়া মিছিল হতে পারে বলে জানান ক্যাম্পের বাসিন্দারা।

ইমাম হোসাইন (রা.) ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.) এবং রাসুলের (সা.) প্রিয় কন্যা হজরত ফাতেমার (রা.) ছেলে। হজরত আলীর মৃত্যুর পর খলিফা হন হজরত মুয়াবিয়া (রা.)। তিনি জীবদ্দশায় নিজ পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। তাকে খলিফা হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ইমাম হোসাইন (রা.) অনুসারীদের নিয়ে কুফার উদ্দেশে হিজরত করেন। পথিমথ্যে কারবালায় তার কাফেলাকে ইয়াজিদের নির্দেশে উমর ইবনে সাদ আবি ওক্কাসের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য অবরোধ করে।

ইমাম হোসাইনকে (রা.) আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইয়াজিদ বাহিনী। কাফেলার নারী-শিশুসহ সবাই তৃষ্ণায় কাতর হয়ে পড়ে। কিন্তু ইমাম হোসাইন (রা.) আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানিয়ে ১০ মহররম যুদ্ধ শুরু করেন। অসম লড়াইয়ে ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার ৭২ সঙ্গী শাহাদাতবরণ করেন। সিমার ইবনে জিলজুশান গলায় ছুরি চালিয়ে মহানবীর প্রিয় দৌহিত্রকে হত্যা করে।

মুসলমানদের কাছে ১০ মহররম দিনটি শোকের। এ ছাড়াও ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন- ১০ মহররম পৃথিবীতে আদম (আ.) আগমন করেন; নবী মুসার (আ.) শত্রু ফেরাউনকে নীল নদে ডুবিয়ে দেওয়া হয়; নূহ (আ.)-এর নৌকা ঝড় থেকে রক্ষা পায়; দাউদ (আ.) এর তাওবা কবুল হয়; আইয়ুব (আ.) আরোগ্য লাভ করেন।

মহানবী (সা.) আশুরার দিনে রোজা রাখতেন। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলকে ১০ মহররম রোজা পালন করতে দেখেছি। বলতে শুনেছি, ‘রমজানের রোজা ছাড়া অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে উত্তম মহররমের রোজা।’

Pin It