‘প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সমস্যা আলোচনায় সমাধান করা উচিত’

image-226790-1614866970

প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে যেকোনো সমস্যা সমঝোতা ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বিকেলে গণভবনে সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করকে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

আলোচনার মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলোর সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সমস্যা থাকে। সেগুলো আমরা মনে করি সমঝোতা ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে এরই মধ্যে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে সবাইকে এই টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।

কোভিড-১৯ মহামারির শুরুতেই সবাইকে সম্পৃক্ত করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ায় বাংলাদেশে এই ভাইরাস মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মহামারির মধ্যে দেশের বাইরে অবস্থানরত প্রবাসীদের দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের পাশপাশি করোনা ভাইরাস মহামারি মোকাবিলা করার পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দেশে রেমিটেন্সের প্রবাহও বেড়েছে।

করোনা ভাইরাস মহামারির প্রাদুর্ভাবে দেশে যেন খাদ্য সংকট দেখা না দেয় সেজন্য সরকার কৃষিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সরকার খাদ্য উৎপাদনে জোর দিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

টিকা সরবরাহসহ কোভিড-১৯ মহামারি সংকটে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোয় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

সাক্ষাৎকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকর তার বাবা ভারতের সাবেক সরকারি কর্মকর্তা কে. সুব্রামারিয়ামের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বই ‘লিবারেশন ওয়ার অব বাংলাদেশ’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন।

মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদীর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের জন্য এটা অনেক বড় সম্মানের।

করোনা মহামারি প্রসঙ্গে জয়শংকর বলেন, এই অঞ্চলের সবাই কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেছি।

করোনা সংকটে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুর্নব্যক্ত করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

কোভিডের প্রভাব কাটিয়ে ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং সেখানে শিল্প কারখানাগুলোতে আগে যেখানে তিন শিফটে কাজ হতো এখন সেখানে চার শিফটে কাজ হচ্ছে বলে জানান তিনি।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা অনেক বড় অর্জন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে একটা বিস্ময়কর উন্নয়ন।

বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।

———————————————————————————————————————————————————————————————————————————-

প্রধানমন্ত্রীকে বাবার লেখা দুটি বই উপহার দিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

=============================================

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুটি গ্রন্থ উপহার দিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। এগুলো লিখেছেন তার বাবা প্রয়াত কে. সুব্রমনিয়াম। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি। এদিন ঢাকায় বিশেষ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ড. এস জয়শঙ্কর। গণভবনে বঙ্গবন্ধু কন্যার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেছেন এই অতিথি।

ড. এস জয়শঙ্কর লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আমার বাবা প্রয়াত কে. সুব্রমনিয়ামের লেখা দুটি বই উপহার দিয়েছি তাকে। ১৯৭২ সালের গোড়ার দিকে বাংলাদেশ নিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে এগুলো অন্যতম। বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি দেখলে বাবা খুশি হতেন।’

কে. সুব্রমনিয়ামের লেখা একটি গ্রন্থের নাম ‘দ্য লিবারেশন ওয়ার’। এটি মোহাম্মদ আইয়ুবের সঙ্গে যৌথভাবে লিখেছিলেন তিনি। অন্যটির নাম “বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া’স সিকিউরিটি”।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে বাংলাদেশ সফর নিয়ে ছয়টি টুইট করেছেন ড. এস জয়শঙ্কর। আরেক টুইটে আতিথেয়তার জন্য শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। তার কথায়, ‘তার বীরত্ব ও নেতৃত্ব আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।’

শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা পৌঁছে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নিজের টুইটে মোদির টুইটার অ্যাকাউন্ট ট্যাগ করে দিয়েছেন তিনি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর নিশ্চিত করতে বিশেষ সফরে দিল্লি থেকে বিশেষ ফ্লাইটে চড়ে আজ সকাল ১০টায় ঢাকায় আসেন ড. এস জয়শঙ্কর। তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিস্তা নদীর পানিবন্টনের বিষয়ে শিগগিরই দুই দেশের পানিসম্পদ সচিবদের মধ্যে আলোচনা হবে বলে জানান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর বিভিন্ন ইস্যুতে ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি।

সবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর নয়াদিল্লি ফিরে গেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

Pin It