করোনাভাইরাস মহামারীকালে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় হেঁটে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ভারতের মিশনের দায়িত্ব নিতে এলেন বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
ত্রিপুরা থেকে সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে আসেন ভারতের নতুন হাই কমিশনার। সেখান থেকে ঢাকায় রওনা হন তিনি।
রীভা গাঙ্গুলী দাসের উত্তরসূরি হিসেবে ঢাকায় নয়া দিল্লি মিশনের দায়িত্ব নিচ্ছেন দোরাইস্বামী।
সকাল ১০টার দিকে নতুন ভারতীয় হাইকমিশনারকে আখাউড়া চেকপোস্টে স্বাগত জানান আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (কসবা সার্কেল) মিজানুর রহমান ও আখাউড়া থানা পুলিশের ওসি রসুল আহমদ নিজামী।
ঢাকায় রওনা হওয়ার আগে আখাউড়ায় উপস্থিত সাংবাদিকদের দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়ে তিনি আনন্দিত।
“ভারতের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। ভারতে আমরা বাংলাদেশকে আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনে করি।”
সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সাথে আরও কীভাবে অংশীদারিত্ব বাড়ানো যায়, সেটি নিয়ে আমি কাজ করব।
“মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পরই আমি কথা বলব। এখন কিছু বলা অনুচিত হবে। নইলে মানুষ বলবে, আমি বেশি বলে ফেলছি।”
দুপুরে তিনি ঢাকায় পৌঁছান বলে ভারতীয় হাই কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, হাই কমিশনে কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দুপুরের পর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নতুন হাই কমিশনার।
৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে হাই কমিশনার দোরাইস্বামীর পরিচয়পত্র পেশ করার কথা রয়েছে।
দিল্লি থেকে বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করে দুদিন ত্রিপুরা সফরে ছিলেন দোরাইস্বামী। সেখানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন যৌথ প্রকল্প ঘুরে দেখেন তিনি।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৯৯২ ব্যাচের কর্মকর্তা বিক্রম দোরাইস্বামী অতিরিক্ত সচিব হিসেবে আন্তর্জাতিক সংগঠন ও সম্মেলন বিভাগের ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস পড়া বিক্রম দোরাইস্বামী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়ার আগে কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছেন।
বাংলাদেশ মিশনের দায়িত্ব পাওয়ার আগে দক্ষিণ কোরিয়া ও উজবেকিস্তানে ভারতের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব সামলেছেন এই পেশাদার কূটনীতিক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব থাকার সময় বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার বিভাগে নানা দায়িত্ব পালন করেছেন দোরাইস্বামী। মন্ত্রণালয়ের সার্ক বিভাগের প্রধানের দায়িত্বও একসময় তার কাঁধে ছিল।