পলাতক থাকাবস্থায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমান দুর্নীতির মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করতে পারেন না। এ আবেদন নিয়ে হাইকোর্ট ভুল করেছেন। মামলা বাতিল চেয়ে জোবায়দার লিভ টু আপিল খারিজ করে দেওয়া আদেশের পূর্ণাঙ্গ লিপিতে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের লিখিত রায় প্রকাশ হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রায়ে আদালত বলেছেন- জোবায়দা রহমান আইনের দৃষ্টিতে পলাতক। হাইকোর্টে তার আবেদনের শুনানি করা ঠিক হয়নি। তিনি পলাতক অবস্থায় মামলা বাতিল চেয়ে শুনানি করেছেন, তার আত্মসমর্পণ করেছেন এমন কোনো আদেশও ছিল না। সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী- সবাই আইনের দৃষ্টিতে সমান অধিকারী। সবাই সুযোগ পাবে, কিন্তু তিনি (জোবায়দা) একটু বেশি সুবিধা পেয়েছেন।
২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করা হয়। মামলায় তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। পরে একই বছরে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী পৃথক রিট আবেদন করেন। রিটে জরুরি আইন ও এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেন।
এই মামলার বৈধতা নিয়ে আরেকটি ফৌজদারি আবেদন করেছিলেন ডা. জোবায়দা। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে জোবায়দা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন জোবায়দা রহমান। যা গত ১৩ এপ্রিল খারিজ করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। জোবায়দার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।