ঢাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক: ডব্লিউএইচও

ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় পরিস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি এডউইন স্যালভাদর।

শনিবার সকালে বনানীতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের বাসায় গিয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

স্যালভাদর বলেন, “ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য নতুন কিছু নয়। দুটি নম্বর গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক কত মানুষ এ মুহূর্তে ডেঙ্গুতে ভুগছে, কত জন চিকিৎসা নিতে আসছে। সংখ্যা দুটি কিন্তু বাড়ছে। এটা উদ্বেগজনক। সংখ্যা যে বাড়ছে।”

গত মাসের প্রথম দিকে ঢাকায় ডেঙ্গু প্রকোপ শুরু হওয়ার পর এরইমধ্যে মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গুতে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, যদিও সরকারের তরফ থেকে মাত্র পাঁচজনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা যখন ডেঙ্গুর প্রদুর্ভাবকে ‘উদ্বেগজনক’ বলছিলেন, তার পাশে দাঁড়িয়ে সম্মতিসূচক মাথা নাড়ছিলেন মেয়র সাঈদ খোকন। তবে মাত্র এক সপ্তাহ আগেও ডেঙ্গু নিয়ে নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

এবারের ডেঙ্গুর ধরনকে উদ্বেগজনক বলছেন চিকিৎসকরাও  

আর গেল মাসে ব্যাপকভাবে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার পর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যখন এবার এই রোগ আরও ভয়াবহ হওয়ার তথ্য জানান, সে সময় সংবাদ সম্মেলন করে সাঈদ খোকন বলেছিলেন, “ডেঙ্গু জ্বর বাসায় সাত থেকে ১০ দিনেই সাধারণভাবে ভালো হয়। তাই আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে।”

এদিনও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নগরবাসীর সচেতনতার কথা বলেছেন মেয়র খোকন।

তিনি বলেন, “ডেঙ্গু কখনও বাইরের ময়লায় বা ড্রেনে হয় না। এটা হয় পরিষ্কার সাদা পানিতে। তাই এই রোগ প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।”

ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ায় আতঙ্ক নয়, দরকার সচেতনতা: মেয়র খোকন  

গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার ৩৩ হাজার বাড়িতে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের কথা জানিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, “এটি ধ্বংস করার উপায় শিখিয়ে দিয়ে আসার পর সেই বাড়িতে পরিদর্শনে গেলে পূর্বের সেই একই পরিস্থিতি দেখতে পাই, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

ডেঙ্গুতে মরছে, কিন্তু সরকারি তালিকায় আসছে না  

অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এখনও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আছে দাবি করে সাঈদ খোকন বলেন, “ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।”

এডিশ মশা নিধনে অকার্যকর ওষুধ ব্যবহার সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দক্ষিণের মেয়র বলেন, “আমরা নৌ বাহিনীর সরবরাহকৃত ওষুধ ব্যবহার করে থাকি। ওষুধের কোনো সমস্যা থাকলে আমরা দেখব।”

সকাল ১১টার দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরও তিনজন সদস্যকে নিয়ে মেয়রের বনানীর বাসয় আসেন এডউইন স্যালভাদর।

ডিএসসিসি জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তারা  প্রতিবেদন দেবেন, যার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে সিটি করপোরেশন।

ঢাকায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্র  

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে হেলথ ইমার্জেন্সির দল প্রধান হাম্মাম এল সাক্কা, আইভিডি ইম্যুনাইজেশন ভ্যাক্সিন ডেভেলপমেন্টর রাজেন্দ্র বোহরা, ঢাকার বিভাগীয় সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর আলম, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তা‌ফিজুর রহমানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Pin It