তোপের মুখে তিতাস গ্যাস কর্মকর্তারা

image-763850-1705424870

গজারিয়ায় গ্যাস লাইন সংস্কার করতে গিয়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন তিতাস কর্মকর্তারা। স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করা হয়, তাদের বাধার মুখে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হন কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের তেতৈতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, তেতৈতলা এলাকায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং সঞ্চালন লাইনে চেক ভালব স্থাপন করতে যান তিতাস গ্যাস কর্মকর্তারা। এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন মর্নিং সান হাইওয়ে হোটেলের পশ্চিম পাশে একটি জায়গায় চেক ভালব স্থাপনের জন্য মাটি অপসারণ করতে থাকে তিতাসের লোকজন। এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এই এলাকার বৈধ-অবৈধ সব গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। দুপুর ৩টার দিকে স্থানীয় একটি মসজিদের মাইকে তিতাসের এ কার্যক্রম বন্ধ করতে স্থানীয়দের এগিয়ে এসে প্রতিরোধ করতে ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর কয়েকশ গ্রামবাসী ওই স্থানে জড়ো হলে উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। পুলিশের উপস্থিতিতেই তিতাসের লোকজনের ওপর চড়াও হন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের তোপের মুখে বাধ্য হয়ে দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে তাদের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ ঘোষণা করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বিষয়টি সম্পর্কে তিতাস গ্যাসের মেঘনা আঞ্চলিক বিপণন অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা চেক ভালব স্থাপন করতে গিয়েছিলাম। চেক ভালব মূলত একটি স্বয়ংক্রিয় সুরক্ষা ডিভাইস। এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট এলাকার গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা, গ্যাসের প্রবাহ একটি নির্দিষ্ট দিকে রাখাসহ অনেক রকমের কাজ করা যায়। সমগ্র গজারিয়া উপজেলার অন্তত চারটি স্থানে এরকম চেক ভালব স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করি আমরা- এটি ছিল প্রথম। এ কাজের জন্য সমগ্র গজারিয়া উপজেলায় মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে যে এলাকায় চেক ভালব স্থাপন করা হচ্ছে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে আমাদের তিন দিনের মতো সময় লাগত- সেজন্য ওই এলাকার গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে মাইকে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীদের তিতাস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়া হয়। গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও স্থানীয়দের বাধায় পরবর্তী কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শিরিনা বেগম বলেন, ‘আমরা তিতাস গ্যাসের বৈধ গ্রাহক, প্রতি মাসে নিয়মিত বিল পরিশোধ করেই আমরা গ্যাস ব্যবহার করছি। আজ হঠাৎ করে বিকাল ৩টার দিকে খবর পেলাম কোনোরকম পূর্বঘোষণা ছাড়াই বৈধ-অবৈধ সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মাইকে ঘোষণা শোনার পর আমরা সেখানে ছুটে যাই। চেক ভালব স্থাপন করার জন্য অত্র এলাকায় তিন দিন গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকবে বলে আমাদের জানানো হয়, তবে আমরা তাদের কথায় আশ্বস্ত হতে পারেনি।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁ আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সরুজ আলম, সোনারগাঁ আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক (মিটার অ্যান্ড ভিজিল্যান্স) আতিকুল ইসলাম, সোনারগাঁ আঞ্চলিক বিপণন অঞ্চলের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) জাহিদুল হক, মেঘনা আঞ্চলিক বিপণন অফিসের ব্যবস্থাপক উপ-ব্যবস্থাপক নাজমুল হক প্রমুখ।

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ওসি মো. রাজিব খান বলেন, সকাল থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা আছে। এখন পর্যন্ত অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি- আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

Pin It